মৌরী সিদ্দিকা : [২] নোভেল করোনা ভাইরাস ২০০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন বাজারে নেই। মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখা ছাড়া প্রশাসনের কাছে আর কোনও উপায় নেই। কিন্তু লকডাউনের এই স্ট্র্যাটেজি কি গরীব দেশের পক্ষে সম্ভব! যে দেশে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন, সেখানে এই ঘরবন্দি টেকনিক কতদিন ধরে রাখা যাবে! এমনই হাজার প্রশ্ন উঠছে চারপাশে। করোনার থাবা বাস্তবিক সমস্যা। কিন্তু তার থেকেও বাস্তবসম্মত সমস্যা, খিদের জ্বালা।
[৩]বিশ্বের সবকটি দেশ কোমর বেঁধে লড়ছে এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে নতুন করে একটি নির্দেশিকা নিয়ে এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের সব দেশই প্রায় লকডাউনের পথে হেঁটেছিলো। থমকে গিয়েছে অর্থনীতি। সামাজিক ব্যবস্থাতে ক্ষয় ধরেছে। ধীরে ধীরে সেইসব বিধি নিষেধ শিথিল করার পথে হাঁটছে বিশ্বের কোনও কোনও দেশ। যেমন সাত সপ্তাহ লকডাউন কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়েছে চিনের উহান। অন্য দেশগুলি চিন্তায় পড়েছে এই অবস্থায় কী করা উচিত! দুটি ক্ষেত্রেই দেশগুলির চিন্তাধারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই নির্দেশিকার ভিত্তিতে নেয়া উচিত। মঙ্গলবার এমনটাই জানানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে।
[৪]বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার(WHO) পক্ষে ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম বলেন, আমরা জানি এই ভাইরাস খুব সহজেই সংক্রমিত হতে পারে জমায়েত থেকে। এই সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রে পরীক্ষা এবং আক্রান্তর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই বিধি নিষেধগুলি এক ধাক্বায় না তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে তোলা উচিত।
[৫]আধানম আরো বলেন, ‘অনেক গরীব মানুষ, পরিযায়ী শ্রমিক এবং উদ্বাস্তুরা দিন আনে দিন খায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে হয় তাদের। চিকিৎসার সুযোগ ন্যূনতম। লকডাউনের জন্য তারা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের বাড়িতে থাকা মানে খাবারা জোগাড়ের চিন্তা।’ লকডাউনের ফলে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার বহু দেশের আর্থিক দুরবস্থা প্রকট হয়ে পড়ছে। একথাও বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) প্রধান।
[৬]বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন দেশে বিধি নিষেধ আংশিক তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব দিকে নজর রাখতে বলেছে সেগুলি হলো- ১. সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনে আনা গেলে। ২. স্বাস্থ্য কাঠামো এমন রয়েছে যেখানে আক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত সকলকে আইসোলেশনে রাখা সম্ভব। ৩. হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব কম। ৪. স্কুল, কলেজ ও কর্মক্ষেত্রে সব ধরনের সতর্কতা গ্রহণ করা হচ্ছে। ৫. কোনও কঠিন পরিস্থিতি চট করে সামলে দেয়া সম্ভব। ৬. ভাইরাসের ফলে স্বাস্থ্য বিধির এই নতুন পরিবর্তন সম্পর্কে সকলে সচেতন। প্রসঙ্গত সারা বিশ্বে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। সূত্র : জি২৪ঘণ্টা
আপনার মতামত লিখুন :