নজরুল ইসলাম: [২] শ্রমিকদের কল্যাণের নামে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে রাজধানী পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন প্রতিদিন গণপরিহন থেকে চাঁদা আদায় করতো। কিন্তু, সাধারণ ছুটিতে গণপরিবহন বন্ধ থাকার এই সময়ে সেসব শ্রমিকদের খোঁজ রাখছেনা সংগঠনগুলো।
[৩] শ্রম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তথ্য বলছে, দেশের সড়ক পরিবহন সেক্টরে মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনের সংখ্যা ৯৩২। সারাদেশে শ্রমিক ইউনিয়ন রয়েছে ২৪৯টি। ঢাকায় বাস ও ট্রাক টার্মিনালকেন্দ্রিক শ্রমিক ইউনিয়ন ছাড়াও প্রতি জেলায় অন্তত দুটি করে বাস ও ট্রাকের শ্রমিক ইউনিয়ন আছে।
[৪] নোয়াখালী জেলার সোনাপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক আরজু বলেন, তার সমিতিতে গাড়ির সংখ্যা ১১৭। তারা শুরুর দিকে শ্রমিকদের তিন-চারদিনের চাল-ডাল দিয়েছিলেন। এখন আর দিতে পারছেন না। ডিসির কাছে সহযোগিতার জন্য আবেদন করেছেন।
[৫] বাংলাদেশ ট্যাংকলরী শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাও শ্রমিকদেও সহযোগিতার জন্য গত রবিবার ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় সচিবের কাছে আবেদন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তারা কখনও কোনও চাঁদা আদায় করেননি। এই দুর্যোগের সময়ে তারা ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার শ্রমিকদেও সামান্য সহযোগিতা করেছেন।
[৬] গত সোমবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাড়ি চললে পরিবহন শ্রমিকদের সংসার চলে। সব সময় মানুষের সংস্পর্শে আসায় পরিবহন শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেশি। এদিকে উপার্জন বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপায়হীন হয়ে অনেক পরিবহন শ্রমিক রাস্তায় নামারও চেষ্টা করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকার যন্ত্রণা শ্রমিকদের কাছে করোনা সংক্রমণের ভয়ের চেয়ে বড় হয়ে উঠছে।
[৭] বাংলাদেশ শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নম্বর ৪৯৪) সাধারণ সম্পাদক করম আলী জানান, তাদের সদস্য সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি। মাসে ২০ টাকা হারে বছরে ২৪০ টাকা করে প্রতিজন থেকে চাঁদা নেন তারা। সেই হিসেবে বছরে ১২ হাজার শ্রমিক থেকে তারা আদায় করেন ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোনও শ্রমিক যেকোনোভাবে মারা গেলে এককালীন ৩০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
[৮] করোনা ভাইরাসের এই দুঃসময়ে তারা কোনও শ্রমিককে সহযোগিতা করেছেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিকদেরকে বলেছি সহযোগিতা করতে!
আপনার মতামত লিখুন :