শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল, ২০২০, ০১:৩৩ রাত
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২০, ০১:৩৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] নববর্ষ উদযাপনের টাকা প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে নয়, শিক্ষার্থীদের কল্যানেই বন্টনের দাবি শিক্ষার্থীদের

ওবায়দুর রহমান সোহান, ঢাবি প্রতিনিধি : [২] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু'র আহ্বানে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য আপ্যায়ন ব্যয়ের মোটা ৫৪ লক্ষ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও ডাকসু ভিপি এবং সমাজসেবা সম্পাদক এ বিষয়ে বিরোধিতা করে আসছেন।

[৩] এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মনে করেন এই অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল তাদের জরুরি মুহুর্তের চিকিৎসা, খাদ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তার জন্য ব্যয় করা হোক।

[৪] নববর্ষের অর্থ বন্টনের বিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, নববর্ষের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হবে শুনেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি অবশ্যই এ সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে কিন্তু আমি মনে করি এই অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার চেয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেই বন্টন করা যেত, তাহলে ব্যাপারটা আরো ফলপ্রসূ হতো৷ আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই টিউশনের উপার্জন দিয়ে পড়াশোনা করতো, কেউ কেউ আবার বাসায়ও সেই টাকা পাঠাত৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি তাদের আর্থিক সাহায্য করা যায়, সেটা অবশ্যই তাদের জন্য অনেক ভালো হবে। যদিও বন্টন প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে, তথাপিও আমি এটাকেই শ্রেয় মনে করি।

[৫] থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী দিপম সাহা বলেন, আমার মনে হয় যেহেতু বিভিন্ন মহল প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে টাকা দিচ্ছে তাই এই টাকাটা লকডাউনের মাঝে বিভিন্ন হলের যারা অসচ্ছ্বল শিক্ষার্থী আছে তাদের দেওয়া উচিত এককালীন হিসেবে। আর সেক্ষেত্রে জটিলতা এড়াতে হলের ডাকসু প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় একটা ফান্ড গঠন করা উচিত বলে মনে করি।

[৬] আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বলেন, এটা আমি ছাত্র হিসেবে কিছুতেই মানতে পারছি না। আমি মনে করি আমাদের ঢাবি কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র ঢাবি পরিবারের সদস্যদের জন্য জরুরি মুহুর্তে চিকিৎসা, খাদ্য বা প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবস্থা করতে পারে বাজেটের উক্ত অংশ দিয়ে।

[৭] ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ঢাবিতে অনেক গরীব শিক্ষার্থী রয়েছে যারা অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করে, দু'একবেলা না খেয়েও থাকে, বাড়ি থেকে টাকা আনা তো দূরের কথা উল্টো টিউশনি করে তাদেরকে বাড়িতে টাকা পাঠাতে হয়। কেউ আছে টিউশন পায়-ই না, পেলেও তা দিয়ে হাত খরচ চালানো সম্ভব, পেট নয়। তাই আমি বলবো, ঢাবি প্রশাসনের উচিত, আগে তার ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর খোঁজখবর নিক, আর ৪০ হাজার শিক্ষার্থী-ই খোঁজ নিবে ১৭ কোটির। সুতরাং নববর্ষ উদযাপনের টাকা ঢাবি শিক্ষার্থীদের কাজেই লাগানো হোক, প্রশাসনের কাছে এই প্রত্যাশাই করছি।

[৮] সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মৃদুল ইসলাম বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নববর্ষ উদযাপনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে। নিশ্চিতভাবে এটি একটি ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু, ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই অর্থ নিজেদের জনশক্তির মধ্যেই প্রদান করতে পারতো। এর দুইটি কারণ আছে। প্রথমতে, আমাদের এমন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন যাদের বাসার অবস্থা খুব সুবিধাজনক নয়। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় তাদেরকে আইডেন্টিফাই করে তাদেরকে সাহায্য করতে পারতো। আর, দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে যদি এই অর্থ গ্রামের মানুষের কাছে যায়। সেক্ষেত্রে, এই অর্থ অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ আমরা দেখতে পারছি যে, অনেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা মেম্বার বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় করে নিজের পকেট ভারি করছেন। ফলে এই অর্থ কতটুকু দরিদ্র মানুষের কাজে আসবে সেই প্রশ্ন থেকই যায়।

[৯] রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব হোসেন বলেন, আমার মনে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ডাকসু সরাসরি অসহায় মানুষদের সাহায্য করলে টাকাটা যথাযথ বণ্টন হবে। তা নাহলে টাকাগুলো যাদের প্রাপ্য তারা নাও পেতে পারে।

[১০] শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও জাতীয় দুর্যোগময় মূহুর্তে সমগ্র দেশকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আওতায় নিতে আমরা আমাদের এই অবদানটুকু রাখবো। এছাড়াও, এই টাকাটা আমাদের অন্যখাতে ব্যবহার করারও সুজোগ নেই। এটা সরকারের বরাদ্দ টাকা তাই এটা খরচ না হলে শুধুমাত্র সরকারের ফান্ডেই দেওয়া যায়।

[১১] তিনি আরোও বলেন, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সকলেই আসবে কেননা সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক অনেক বড়। আমি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিচ্ছি কেউ যেন এই বেষ্টনী থেকে বাদ না যায়। একই সাথে শিক্ষার্থীরা যেন নিজ দায়িত্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে এই অনুদান সংগ্রহ করে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়