মোজাম্মেল হোসেন তোহা : দুই সপ্তাহ লিবিয়াতে হাফতারের বাহিনী ব্যাপক মার খেয়েছে। একাধিক ফ্রন্টে। গত এক বছরের মধ্যে এ রকম মার তারা খায়নি। তাদের দুই থেকে তিনশ সেনা নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত দশজন টপ কমান্ডারও আছেন। এতো অল্প সময়ের মধ্যে এতো বেশি সৈন্য নিহত হওয়াটা বিশাল ব্যাপার। বিপরীতে তাদের পাল্টা আক্রমণও অবশ্য থেমে নেই। দুই সপ্তাহ আগে একদিনে তাদের আক্রমণে জিএনএর ৩০ জনের মতো মারা গিয়েছিলো। মূলত ওই ঘটনার পরই জিএনএ সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণ শুরু করে। এছাড়াও সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী গত তিন মাসে জিএনএর পক্ষে লড়াই করা অন্তত দেড়শ সিরিয়ান মার্সেনারিও মারা গেছে। কিন্তু হাফতারের এবং তার ব্যাকার আরব আমিরাতের আক্রমণের প্রধান সমস্যা হচ্ছে এতে প্রতিপক্ষের সামরিক ক্ষতি যতোটা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হয় সিভিলিয়ানদের। সম্প্রতি ত্রিপোলির বিভিন্ন এলাকা লক্ষ্য করে হাফতার বাহিনী এলোপাতাড়ি রকেট নিক্ষেপ করেছে। একাধিক রকেট গিয়ে পড়েছে ত্রিপোলির আল-খাদরা হাসপাতালের আশপাশে। ফলাফল? সাধারণ রোগীদের হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছে, সিরিয়াস রোগীদের তাড়াহুড়া করে বেজমেন্টে আশ্রয় নিতে হয়েছে, ডেলিভারির প্রক্রিয়ায় থাকা এক গর্ভবতী মহিলার গর্ভপাত ঘটে গেছে এবং চারজন আহত হয়েছে, যাদের একজন বাংলাদেশি।
লিবিয়ার যুদ্ধটা এই মুহূর্তে প্রধানত তুরস্ক বনাম আরব আমিরাতের। দীর্ঘদিন আরব আমিরাত একাই লিবিয়াতে অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়েছে। কিন্তু তাদের একটা লিমিটেশন আছে। তারা যেটাই পাঠাতে চায়, সেটা পাঠাতে হয় প্লেনে করেÑ শত শত ফ্লাইটে। বিপরীতে তুরস্ক পরে যোগ দিলেও গত কয়েকমাসে সমীকরণ পুরো পাল্টে দিয়েছে। কারণ তারা অস্ত্র পাঠিয়েছে জাহাজ বোঝাই করে এবং ধারণা করা হয়, আমিরাত গত কয়েক বছরে যা কিছু পাঠিয়েছে, তুরস্ক গত কয়েকমাসে সব ছাড়িয়ে গেছে। তার ফলাফলটাই হয়তো এখন দেখা যাচ্ছে। আমিরাতের পাল্টা রিঅ্যাকশন কী হবে এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তারা কি সমঝোতার পথে হাঁটবে? নাকি আরও অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়ে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করবে? করোনাভাইরাসের কারণে তেলের দামের অবস্থা খারাপ। অর্থনীতিতে দীর্ঘকালীন মন্দা চলবে। এটা কী বিদেশি শক্তিগুলোকে লিবিয়া ছাড়তে বাধ্য করবে? কে জানে? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :