শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৪:২৫ সকাল
আপডেট : ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৪:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কাদের সমর্থন-সহায়তায় ছিলেন খুনি মাজেদ?

আবুল বাশার নূরু:[২] জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত খুনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর যেই প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো, তিনি এত দিন কোথায় ছিলেন? কীভাবে ছিলেন?

[৩]আদালতে সরকারি কৌঁসুলির প্রশ্নের জবাবে আবদুল মাজেদ বলেছেন, ২৩/২৪ বছর তিনি ভারতের কলকাতায় ছিলেন।

[৪] ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি প্রথমে আত্মগোপন করেন, পরে পালিয়ে বিদেশে চলে যান।

[৫] বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় হয়েছিল ২০০৯ সালে। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও ক্যাপ্টেন মাজেদ কোথায় আছেন জানা যাচ্ছিল না। বুধবার আনন্দবাজারের শিরোনাম ছিল, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী দুই দশক লুকিয়ে ছিলেন কলকাতায়; অবশেষে ঢাকায় ধরা পড়লেন।’ এতে আরও বলা হয়, নব্বই দশকের মাঝামাঝি আবদুল মাজেদ প্রথমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান বলে জানা গেছে, পরে ভারতের বাইরে গিয়ে আবারও ভারতে ফিরে আসেন। বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে কলকাতায় অবস্থান করছিলেন তিনি। কলকাতায় থাকার সময় মাজেদ তেমন কিছু করতেন না। বাংলাদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগযোগও ছিল নিয়মিত। মার্চের মাঝামাঝি ময়মনসিংহের সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দেশে ফেরার পর মিরপুরের বাসায় ওঠেন। (আনন্দবাজার, ৮ এপ্রিল ২০২০)

[৬] ইত্তেফাকের খবর অনুযায়ী, ২০১৮ সাল পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) বিভাগের কাছে মাজেদের বিষয়ে কোনো তথ্য ছিল না। অপর একটি সূত্র জানায়, আবদুল মাজেদ কলকাতায় কোথায় ছিলেন তার বিস্তারিত তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংগ্রহ করেছে। ২০১৯ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো এনসিবির সহকারী মহাপুলিশ পরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সর্বশেষ মাজেদের অবস্থান ভারত ও পাকিস্তানে ছিল বলে শোনা যায়। তখন দুই দেশকে চিঠিও দেওয়া হয়। জবাবে ভারত বলেছিল, মাজেদ তাদের দেশে নেই। তবে পাকিস্তান কোনো জবাব দেয়নি। (ইত্তেফাক, ৮ এপ্রিল, ২০২০)

[৭] তাহলে প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে তিনি সীমান্ত পার হলেন? তিনি কি বৈধভাবে প্রবেশ করেছেন? তা হলে তিনি কোন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করতেন? অবৈধভাবে ঢুকে থাকলে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা কী করলেন? আবদুল মাজেদ নামে পাসপোর্ট ব্যবহারের সুযোগ নেই। তাঁর নামে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আগেই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল? আবার পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া অন্য দেশে কারও পক্ষে দীর্ঘদিন অবস্থান করাও অসম্ভব? তাহলে কি তিনি পরিচয় গোপন করে অন্য নামে পাসপোর্ট-ভিসা করেছিলেন? কারা তাঁর এই অবৈধ কাজে সহায়তা করেছেন? তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, মাজেদ ভারতের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ এড়িয়ে এত বছর থাকলেন কীভাবে?

[৮] ভারত সরকার যদি তাঁকে পুশব্যাক করে থাকে, তাহলে এত দিন কেন করল না? এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে একাধিক সাবেক ক‚টনীতিক বলেন, এ রকম একজন চিহ্নিত ও ইন্টারপোলে সতর্ক করে দেওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দারা কিছুই জানতেন না, এটা বিস্ময়কর। আর তাঁদের নজর এড়িয়ে মাজেদের পক্ষে যদি এত দিন পালিয়ে থাকা সম্ভব হয়ে থাকে, তাহলে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক রয়ে গেছে বলেই মানতে হবে। কেননা, একজন আত্মস্বীকৃত খুনি এভাবে পালিয়ে থাকতে পারলে জঙ্গিসহ অন্য দুর্র্ধষ অপরাধীদের অবস্থান করাও অসম্ভব নয়। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের আসামি নুর হোসেন কলকাতায় পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরই সেখানে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং তারা পুশ ব্যাক করে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ অচেতন অবস্থায় সীমান্তে পড়ে থাকলে মেঘালয়ের পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এখনো তিনি সেখানে আছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন।
[৯] দৈনিক প্রথম আলোর ৮ এপ্রিল অনলাইনে প্রকাশিত সোহরাব হাসানের লেখার চুম্বক অংশটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়