শিরোনাম
◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী ◈ উপজেলার ভোটে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : ওবায়দুল কাদের  ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘন: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন ২৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি ◈ ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৬ ◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ১৩  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ

প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল, ২০২০, ১১:১১ দুপুর
আপডেট : ০৮ এপ্রিল, ২০২০, ১১:১১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] দক্ষিণখানের চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মূল অভিযুক্ত রকিব গ্রেপ্তার

সুজন কৈরী: [২] রাজধানীর দক্ষিণখানের প্রেমবাগান এলাকার একই পরিবারের স্ত্রী, শিশুপুত্র ও শিশু কন্যাসহ ৩ জনকে হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রকিব উদ্দিন আহম্মেদ ওরফে লিটনকে (৪৬) গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রকিব নিহত নারীর স্বামী এবং শিশুদের বাবা।

[৩] ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের বিমান বন্দর জোনাল টিমের ইনচার্জ এডিসি মো. কায়সার রিজভী কোরায়েশী জানান, মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর থানা এলাকা থেকে লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

[৪] গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমবাগান এলাকার জনৈক মো. মনোয়ার হোসেনের বাড়ীর চার তলার ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে অর্ধগলিত নারীসহ দুই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে হত্যার বিষয়ে একটি নোট পায় পুলিশ। সেটি নিয়েই শুরু হয় তদন্ত। গোয়েন্দা বিভাগ নোটের লেখা পর্যালোচনা করে ধারনা করে, পলাতক রকিব উদ্দিন তাদের হত্যা করেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

[৫] গ্রেপ্তার রকিব উদ্দিন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তিনি নিজেই তার স্ত্রী, তার শিশু পুত্র এবং কন্যা সন্তানকে হত্যা করে পাগলের বেশ ধারণ করে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিলেন।

[৬] হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি জানান, তার স্ত্রী মুন্নী (৩৭), ছেলে ফারহান (১২) ও মেয়ে লাইবাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লি. (বিটিসিএল) এ কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক হিসাবে উত্তরায় কর্মরত ছিলেন। মাঝে মাঝে টুকটাক পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝামেলা হলেও সবাইকে নিয়ে সুখে শান্তিতে ছিলেন। এলাকায় এবং তার অফিসেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন। কোন খারাপ অভ্যাস না থাকলেও অফিসের কলিগসহ অন্যান্য ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা সুদের উপর বিভিন্ন সময়ে ধার নিয়েছিলেন। অনলাইনে জুয়া খেলে টাকাগুলো নষ্ট করেন। পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিলে বাসায় স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে খারাপ আচরন করতেন এবং গত বছরের ডিসেম্বরে কিছু দিন আত্মগোপনে ছিলেন। তখন তার পরিবার দক্ষিণখান থানায় জিডি করে। কিন্তু কিছুদিন পর বাসায় ফিরে আসে। পাওনাদারদের টাকার চাপে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলোচনা করলেও তার পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজন তাকে তার জুয়া খেলার কারণে বিশ্বাস করতো না। তখন পাওনাদারদের বিভিন্ন চাপের কারণে রকিব উদ্দিনের স্ত্রী মুন্নী ও তার ছেলে ফারহান তাকে বলে, এভাবে বেঁচে থেকে লাভ কি? আমাদের কাউকে দিয়ে মেরে ফেলো, এভাবে বেঁচে থাকতে ভাল লাগে না। পাওনাদারদের চাপ, আত্মীয় স্বজনদের অবিশ্বাস এবং স্ত্রী-সন্তানদের বিভিন্ন কথা তার অসহ্য লাগে।

[৭] একপর্যায়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নাস্তার করে। এরপর রকিব স্ত্রীর সঙ্গে গল্প করেন। দুপুর সাড়ে ১২ টায় স্ত্রী মুন্নী হালকা ঘুমিয়ে পড়েন। ছেলে ফারহান পাশের রুমে ঘুমিয়ে ছিল এবং মেয়ে লাইবা টিভি রুমে টিভি দেখছিল। ওইয় হঠাৎ লিটনের মাথায় চিন্তা আসে যে, এই দুনিয়ায় তিনি তার পরিবারসহ বেঁচে থেকে লাভ কি? বরং তাদের সবাইকে মেরে নিজে আত্মহত্যা করলে তার স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা সন্তানসহ সে নিজে পাওনাদার ও অন্যান্য দুনিয়ার যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবেন। তখনই তিনি বাসায় থাকা হাতুড়ি দিয়ে প্রথমে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে এবং গলা চেপে হত্যা করেন। এরপর মেয়ে ও ছেলেকে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর বিকেল চারটার দিকে লিটন বাসায় তালা দিয়ে বের হয়ে রেল লাইনে যায়। ট্রেনের নীচে পড়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। কিন্তু না পেরে বিভিন্ন জায়গায় পাগলের মত ছদ্মবেশ ধারণ করে ঘুরতে থাকেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়