সুজিৎ নন্দী: [২] চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে কার্যত ভাটা পড়েছে। গত তিন মাসে মশা নিধনে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। এতে ক্রমেই বাড়ছে মশার উপদ্রব। দুই সিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মশক নিধন কর্মীরা করোনা কার্যক্রমে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
[৩] জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছিল দুই সিটি। সেটিও সপ্তাহখানের ব্যবধানে ঝিমিয়ে পড়ে। পরবর্তিতে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মার্চে শুরু হয় করোনা আতঙ্ক। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে মশক নিধন কর্মীদেরকে নিয়োজিত করা হয়েছে জীবাণুনাশক স্প্রে করার কাজে। কিন্তু এর অনেক আগে থেকেই ঝিমিয়ে পড়েছে মশক নিধন কার্যক্রম।
[৪] ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিধন এবং করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা একই সঙ্গে কাজ করছি। আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচজন মূলকর্মী ও আউটসোর্সিংয়ের ১০জনসহ মোট ১৫ জন প্রতিদিন সকাল-বিকাল লার্ভিসাইড ও ফগিং করছে। এখানে ডেঙ্গু বা করোনার ক্ষেত্রে কোন ভাবেই অবহেলার কোন সুযোগ নেই।
[৫] ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা একটি প্রকল্প গত বছর মন্ত্রণালয়ে সাবমিট করেছিলাম। কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই। তবুও আমরা যে কয়জন কর্মী আছে তাদের দিয়ে মশক নিধন কাজ অব্যাহত রেখেছি।
[৬] রাজধানীর হাজারীবাগ, বংশাল, খিলগাঁও, কল্যানপুর, দক্ষিণ কল্যানপুর, যাত্রাবাড়ী, মগবাজার, মিরপুর, উত্তরা ও নতুনবাজার এলাকায় সবচেয়ে বেশি মশার উপদ্রব বেড়েছে। এলাকাবাসী জানায়, গত বছর ডেঙ্গুর উপদ্রবের পর দুই সিটি যেভাবে মশা নিধনে মাঠে ছিল, গত তিন মাসের বেশি সময় সেভাবে কার্যক্রম দেখা যায়নি। এসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাসাবাড়িতে মশা নিয়ন্ত্রণে কয়েল এবং অ্যারোসলেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর।
[৭] ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, আমাদের উপস্থিতিতে উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় তদারকি করে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। কিন্তু উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ডে তো একযোগে করা সম্ভব না। স্থানীয় কাউন্সিলর এবং মশক কর্মীরা নিজে থেকে কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে।
[৮] ডিএসসিসি সূত্র জানায়, সংস্থাটিতে মোট মশক নিধন কর্মী রয়েছেন ৪২৪ জন। যারা ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৫ জন করে সকাল-বিকাল দুবেলা লার্ভিসাইড ও ফগিংয়ের কাজ করেন। যদিও সংস্থাটিতে আউটসোর্সিংয়ের জনবল নেই। কিন্তু এখানেও অভিযোগ রয়েছে, জনবলের সংকট থাকলেও যারা রয়েছেন তারাও ঠিক মত কাজ করছেন না।
আপনার মতামত লিখুন :