মশিউর অর্ণব: [২] ‘কালাজ্বর’ এমন একটি রোগ, যা ‘লিশম্যানিয়াসিস’ রোগের কয়েকটি প্রকারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর, এতে প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
[৩] লিশম্যানিয়া গণভুক্ত এক প্রকার প্রোটোজোয়া পরজীবী এই রোগটি ঘটায় এবং বেলেমাছির কামড়ের মাধ্যমে এটি বিস্তার লাভ করে।
[৪] মানুষের কলিজা, প্লীহা ও অস্থিমজ্জাতে পরজীবীটি সংক্রমন ঘটায় এবং চিকিৎসা না দিলে মৃত্যু প্রায় অবধারিত।
[৫] পরজীবীঘটিত রোগগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয় প্রাণঘাতী রোগ, ম্যালেরিয়ার পরই কালাজ্বরের স্থান।
[৬] উনিশ শতকের শুরুর দিকে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব থাকলেও বাংলাদেশ, ভারত, চীন, দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে এটি ব্যাপকভাবে দেখা যায়।
[৭] পৃথিবীর প্রতি দশটি কালাজ্বর রোগির মধ্যে নয়টিই বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল ও সুদানে বিদ্যমান।
[৮] ১৯২০ সালে প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসক উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী কালাজ্বরের ওষুধ ‘ইউরিয়া স্টিবামাইন’ আবিষ্কার করেন।
[৯] ১৯২২ সালে ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ এ ৮ জন কালাজ্বর রোগীকে সুস্থ করার বিবরণসহ উপেন্দ্রনাথের আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়।
[১০] তাঁর চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্বন্ধিত রচনাবলীর মধ্যে ‘ট্রিটিজ অন কালাজ্বর’ ব্যাপক জনপ্রিয়।
[১১] ১৯২৯ সালে তাঁকে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল।
[১২] আবিষ্কারের প্রতিদানস্বরুপ ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ সরকার উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীকে ‘রায় বাহাদুর’ ও ‘নাইট’ উপাধিতে সম্মানিত করেন।
(তথ্যসূত্রঃ হিস্টোরি অফ পেনডেমিক মেডিসিন এন্ড সাইন্স, জাতীয় ই-তথ্যকোষ, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া)
আপনার মতামত লিখুন :