সাঈদ তারেক : [১] আমেরিকার একদল গবেষক বলছেন, ভাইরাসটি শুধু হাত হয়ে নাক মুখ চোখ দিয়েই নয়, নিঃশ্বাসের সাথেও শরীরের ভেতর ঢুকতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি কথা বলার সময় তার মুখ থেকেও ভাইরাস নির্গত হতে পারে। এজন্য বাইরে বেরুলে এবং কারও সাথে কথা বলার সময়ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। [২] কোনো লক্ষণ ছাড়াই কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি প্রাথমিক পরীক্ষায় শনাক্ত না হওয়ার পরও কারও কারও দেহে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
করোনা নিয়ে বিশ্বব্যপী নিত্য নানা গবেষণা হচ্ছে। হতে পারে করোনা প্রায়শ তার রূপ এবং আক্রমণের স্টাইল পরিবর্তন করে চলেছে। এই ভাইরাসটি একটু লম্বাটে সুতোর মতো। একধরনের তৈলাক্ত পদার্থ দিয়ে আবৃত। এই আবরণের বাইরের দিকটায় স্পাইক বা শিকের মতো কিছু সুড় আছে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশির সাথে এটি বাতাসে ছড়ায়। ওজন আছে বিধায় তা চার থেকে পাঁচঘণ্টা বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এরপর মাটিতে পড়ে যায়। ভাসমান অবস্থায় তা মানুষের শরীরের অংশ, নাকে মুখে বা জামা কাপড়ের ওপর গিয়ে পড়ে। হাত দিয়ে ওই জামা কাপড় ধরলে বা শরীরের অনাবৃত অংশ স্পর্শ করলে এবং সেই হাত মুখ নাক চোখে লাগালে তবেই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। দেহে ঢুকেও গলায় অবস্থান করে চার দিন। এ সময়কালের মধ্যে তাকে মেরেও ফেলা যায়। যদি এখানে টিকে যেতে পারে তবেই তা ফাইনালি ফুসফুসে ঠাঁই করে নেয় এবং প্রচন্ড শক্তি বৃদ্ধি করে ফুসফুস অকেজো করে দেয়।
কাজেই এর চলার পথ খুব একটা সহজ না। আমরা সচেতন এবং সতর্ক হলে ফুসফুসে যাওয়ার আগেই এটিকে মেরে ফেলতে পারি। প্রথমত : বাইরে বেরুলে হ্যান্ড গ্লাভস এবং মাস্ক পড়া। বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত মুখ ধোয়া। সাবান ভাইরাসের ওপরের তৈলাক্ত আবরন নষ্ট করে দেয়, ভাইরাসটি মরে যায়। অ্যালকহলও এই আবরন গলিয়ে দিতে পারে। সেজন্য হাত ধোয়া সম্ভব না হলে অ্যালকহল সোয়াব বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যায়। বাইরে ব্যবহৃত জামা কাপড় ধুয়ে দেয়া বা কয়েক ঘণ্টার জন্য শুকনো জায়গায় আলাদা করে ঝুলিয়ে রাখা। দিনে তিন চারবার লেবু বা আদা দিয়ে গড়ম চা খাওয়া, লবন পানির গার্গল করা। চিকিৎসাবিদরা বলছেন মোটামুটি এই কাজগুলো করলেই করোনা থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা যাবে।
আমাদের এখানে সমস্যা হচ্ছে টেস্টিং সুবিধা নামমাত্র। যে সব দেশ ক্রমাগত টেস্ট করে সন্দেহভাজন এবং আক্রান্তদের আলাদা করে ফেলতে পেরেছে তাদের মৃত্যুহার কম। ১৮ কোটির দেশে এ পর্যন্ত আমরা মাত্র ৬১ জনকে খুঁজে পেয়েছি। আমরা জানি না কারা ক্যারিয়ার। প্রত্যেকেই অপরজনকে সন্দেহ করছি। ফলে জনসাধারণের মাঝে কাজ করছে ভীষণ রকমের আতঙ্ক। অনেকে শুচিবাইগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। তার ওপর লম্বা সময় ঘরে বন্দী থাকায় অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছেন।
তারপরও অত আতঙ্কিত হবার কিছু নাই। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বাতাস এখন অন্য যে কোন সময়ের চাইতে নির্মল এবং শুদ্ধ। ধুলাবালি নাই কার্বন ডাই অক্সাইড নাই লিড নাই। এই বাতাসে কোন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াও থাকা সম্ভব না। লক্ষ্য করে দেখবেন, গত কয়েকদিনে রাজধানীতে সর্দি কাশি হাপানি এ্যাজমা এ্যালার্জি রোগীদের অনেকে এমনিতেই ভালো আছেন। বাতাস এবং আবহাওয়া পক্ষে। এ অবস্থায় নিজেরা সতর্ক হলেই এই আপদ থেকে বাঁচতে পারবো বলে আমার ধারণা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :