শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ৩১ মার্চ, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ৩১ মার্চ, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাঁচুন জীবনের জন্য, বাঁচুন সুন্দরের জন্য, বাঁচুন আনন্দের জন্য, বাঁচুন প্রাণময় প্রাঞ্জলতা নিয়ে

এম আমির হোসেন : অস্তিত্ব বিস্ময়ের। কোনো সাধারণ কারণে আমার বাবা-মায়ের বিয়ে নাও হতে পারতো, কতো স্থূল কারণেই তো বিয়ে ভেঙে যায়। আমি অ্যাবরশন হয়ে যেতে পারতাম, যেমন অনেকেরই হয়। যতোবার গাড়িতে চড়েছি তার একবারও যদি ড্রাইভার মোক্ষম ভুল করতো তবে আমি আজ বেঁচে থাকতাম না। রোগ, দুর্ঘটনার মতো খুব সামান্য কারণেই আমার জীবন শেষ হয়ে যেতে পারতো। এগুলো কিছুই হয়নি। আমি এখনো বেঁচে আছি সুস্থ শরীরে। আমি আছি বলেই এতো কিছু আছেÑ এই হাসি, অভিমান, বেদনা, সুখ, প্রেম-অপ্রেম কিংবা আশা-হতাশা আছে। প্রতিদিনকার এতো সংবাদ, রাজনীতি, ইতিহাসের বাঁক আছেÑ আমি আছি বলেই এই ঘটনাবলীর সাক্ষী আমি। আসলে আমার অস্তিত্ব আছে বলেই জগতের অস্তিত্ব আছে। আমি নেই তো কিছুই নেই, কিংবা থাকলেও তাতে আমার কিইবা আসে যায়। তাই ইচ্ছা হয় চিৎকার করে বলি নিজেকে, কেবল নিজেকেই গুরুত্ব দিন। অন্যের চিন্তা করায় অবরুদ্ধ হবেন না। এতোটা সস্তা নন আপনি। অন্যের কথা অন্ধ অনুকরণের জন্য আপনার জীবন নয়। কারও চিন্তা-দাস হয়ে থাকবেন না। দাস জীবনে কোনো সম্মান নেই। হায়! মানুষ কেন কারাগারের এই দাস জীবনকেই ভালোবাসে? কেন? খুব ইচ্ছা হয় মানুষকে ডেকে নিজের গুরুত্ব অনুধাবনের কথা বলি। জীবনের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু পৃথিবীতে নেই। মৃত্যু জীবনের অনিবার্য পরিণতি। মৃত্যু শিকারি নয়, জীবনকে শিকার করার জন্য মৃত্যু ওঁৎ পেতে নেই, বরং জীবনের দৌড়ঝাঁপ শেষ হয়ে গেলে মৃত্যু হলো চিরবিশ্রামের বিছানা, মৃত্যু হলো প্রশান্তি, নির্ভার ঘুম। মৃত্যু জীবনের বিপরীত নয়, জীবনের শত্রু নয়। স্বাভাবিক পরিণতি এটি। তাই মৃত্যু নিয়ে এতো বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আমি অনেক লোককে দেখেছি, মৃত্যু-ভয়ে জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে থাকতে। আমি দেখেছি, মৃত্যু নিয়ে মহাসমারোহে ব্যবসা করছে বিশ্বাস-রক্ষক সেনানিরা। কেউ মৃত্যুর ভয়কে উসকে দিচ্ছে, কেউ মৃত্যুকে মহিমান্বিত করে জীবনকে তুচ্ছ ভাবা শেখাচ্ছে। তারা ভ-, তারা শঠ ও কাপুরুষ। মানুষ কী? মানুষ প্রাণিজগতের উন্নত এক প্রাণী যা অযুত-নিযুত পরমাণু দিয়ে গঠিত। মানুষ প্রকৃতির সন্তান, প্রকৃতির অংশ। এই পরমাণু-সমষ্টির দৃশ্যমান অবস্থার নাম মানবদেহ, গুণগত অবস্থার নাম প্রাণ। এই প্রাণসমৃদ্ধ দেহের প্রবৃত্তি, আচার, শিক্ষা, আবেগ প্রভৃতি নিয়ে যে যাপনপ্রণালী তার নামই হলো জীবন। প্রাণ শেষ হলে জীবনও শেষ হয়, এই অযুত-নিযুত পরমাণু প্রকৃতিতে মিশে যায়, রূপ পরিবর্তন করে, মূলরোম দিয়ে উদ্ভিদের ফুল, পাতা, ফলের অংশ হয়, কখনো খাদ্য হয়ে প্রবেশ করে অন্য প্রাণীর দেহে।
মৃত্যুর ভয়ে মানুষ সতত উৎকণ্ঠিত থাকে। মৃত্যু নয়, বরং আমাদের জীবন নিয়ে উৎকণ্ঠিত থাকা উচিত, জীবনের অনিত্যতা-অনিশ্চয়তাকে নিয়ে, জীবনের নির্ধারিত স্বল্প সময়কে নিয়ে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে নিয়ে, মুহূর্তগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার হলো কিনা তা নিয়ে, একটি মুহূর্তও বিনা আনন্দে নষ্ট হলো কিনা, উটকো কষ্টে অপচয় হলো কিনা তা নিয়ে উৎকণ্ঠিত হওয়া উচিত আমাদের। যতোদিন বেঁচে আছেন দাপটের সঙ্গেই বেঁচে থাকুন। ‘আপাত সৎ’ থেকে সর্বোচ্চ যতোটুকু আনন্দ আহরণ সম্ভব ততোটুকু আনন্দ নিয়েই বাঁচুন। জীবন কখনো ভুলহীন হয় না, ভুল মানেই পাপ নয়। বিবেকের শান্তিই হলো পুণ্য, বিবেকের পরিচ্ছন্নতাই হলো পবিত্রতা। জীবিত থাকা আর বেঁচে থাকা এক নয়। বাঁচুন জীবনের জন্য, বাঁচুন সুন্দরের জন্য, বাঁচুন আনন্দের জন্য, বাঁচুন প্রাণময় প্রাঞ্জলতা নিয়ে। (অণুদর্শন) এই লেখাটি ২০১২ সালে লেখা। প্রাসঙ্গিক বলে আবার দিলাম। ঈষৎ পরিমার্জিত। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়