শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ৩০ মার্চ, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] এক যুগে ২০ স্বর্ণ চোরাকারবারির ব্যাংক হিসাবে ৪০০ কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক : [২] চট্টগ্রামের ২০ স্বর্ণ চোরাকারবারির ব্যাংক হিসাবে গত এক যুগে ৪০০ কোটি টাকার ওপরে জমা হয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংকে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করেন তারা। অবৈধভাবে অর্জিত এসব অর্থ দিয়ে তারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় স্থাবর সম্পদ গড়েছেন বলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

[৩] সিআইডির অনুসন্ধান বলছে, স্বর্ণ চোরাচালান, হুন্ডি এবং অবৈধ চোরাচালানের মাধ্যমে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে। জমা হওয়া অর্থের বৈধ কোনো উৎস দেখাতে পারেননি তারা। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলাও করেছে সিআইডি। মামলায় আসামিরা হলেন চট্টগ্রামের আবু আহাম্মদ, ইকবাল মোহাম্মদ, আবু রাশেদ, এসএম আসিফুর রহমান, ওবায়দুল আকবর, রফিক, মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বাবলু, ইমরানুল হক মো. কপিল চৌধুরী, এমতিয়াজ হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ফরিদুল আলম, মোহাম্মদ এরশাদুল আলম, মো. হাসান, রুবেল চক্রবর্ত্তী, মো. মিনহাজ উদ্দীন, সাগর মহাজন, দিনবন্ধু সরকার, মো. আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মো. শাহজাহান ও টিটু ধর।

[৪] তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মৃত আলী আহমদের ছেলে আবু আহাম্মদ ওরফে আবু স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের চট্টগ্রাম শাখায় ২০০৫ সালে ব্যাংক হিসাব খোলেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ওইসব ব্যাংক হিসাবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০৪ কোটি ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৬৭ টাকা জমা হয়। বিপুল এ অর্থের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি। পরবর্তী সময়ে এ অর্থ তুলে আবু আহাম্মদ ফটিকছড়ি থানাধীন ধর্মপুর ও জাহাপুর মৌজায় ২৪টি জমি কেনেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকায়ও ১৫ দশমিক ৯৪ কাঠা জমি কিনেছেন। পাশাপাশি নিরিবিলি রোডের হিলভিউ আবাসিক এলাকায় ৬ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। চাঁদগাঁও মৌজায় পল্লী কাঁকন ও পল্লী শোভা কনভেনশন হল, ফটিকছড়ির ফতেহনগরে দৃষ্টিনন্দন ৩ তলা বিলাসবহুল বাড়িও নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও অবৈধভাবে আয় করা অর্থ দিয়ে তিনি দুবাইতে তিনটি দোকানও কিনেছেন।

[৫] মানি লন্ডারিং মামলার আরেক আসামি ইকবাল। তিনি আবু আহাম্মদের সহযোগী হয়ে দীর্ঘদিন স্বর্ণ চোরাচালান ও অবৈধ হুন্ডির ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। তার নামে চারটি বেসরকারি ব্যাংক হিসাবে এক যুগে জমা হয়েছে ৫২ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ২০৭ টাকা। মামলার ৩ নম্বর আসামি আবু রাশেদের নামেও রয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক হিসাব। ওইসব ব্যাংক হিসাবে ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জমা হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশেও পাচার করেছেন আবু রাশেদ। এ কাজে তিনি তার কর্মচারী হাবিবুর রহমান, মায়নুল হাসান রবি, মো. সোলাইমান, মুহাম্মদ পারভেজ মিয়া, মো. সাহাবুদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, আবদুর রহিমকে ব্যবহার করেছেন। তাদের মাধ্যমে আবু রাশেদ ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাচার করেছেন।

[৬] সিআইডির অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মামলার আরেক আসামি এসএম আসিফুর রহমানের ব্যাংক হিসাবে ২০ লাখ টাকা জমা হয় গত এক যুগে। এছাড়া মামলার ৫ নম্বর আসামি মো. ওবায়দুল আকবরের ব্যাংক হিসাবে ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ৬ নম্বর আসামি রফিকের ব্যাংক হিসাবে ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বাবলুর ব্যাংক হিসাবে ৫০ লাখ টাকা, ইমরানুল হক মো. কপিল চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা হয়। এর বাইরে এমতিয়াজ হোসেনের ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকাসহ অন্য আসামিদের ব্যাংক হিসাবেও এক যুগে জমা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

[৭] সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইমের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের মামলায় ২০১৭ সালে এ চক্রের সদস্যরা গ্রেফতার হন। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ তিন বছর অনুসন্ধান শেষে তাদের বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। তবে এসব সম্পদের বৈধ কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি। এ ঘটনায় ওইসব সোনা চোরাকারবারির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে আরেকটি মামলা করা হলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়