শিরোনাম
◈ জুলাই যোদ্ধা নারীরা নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি ◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশিত : ৩০ মার্চ, ২০২০, ১১:২৯ দুপুর
আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০২০, ১১:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] সরকারের দুই সমীক্ষা প্রতিবেদন: দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫ ভাগই ঝরে পড়ছে

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। প্রথম শ্রেণিতে ১০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হলে তাদের মধ্যে প্রায় ৬৫ জন এসএসসি পর্যন্ত পৌঁছায়। সরকারের দুটি সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

[৩] একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। ২২ মার্চ এটি প্রকাশের কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তা স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আরেকটি গত মাসে প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

উভয় প্রতিবেদনের তথ্যমতে, প্রাথমিক স্তরে বর্তমানে ঝরে পড়ার হার ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ৬১ দশমিক ৪ জন পিইসি পরীক্ষা পাস করে।

তাদের মধ্যে আবার ৪ জনই ভর্তি হয় না ষষ্ঠ শ্রেণিতে। যে ৯৬ শতাংশ ভর্তি হচ্ছে নিম্ন মাধ্যমিকে, তাদের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে ভর্তির হার ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।

কিন্তু এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩ দশমিক ২৭ শতাংশ এসএসসি পর্যন্ত পৌঁছায়। বাকি ৩৬ দশমিক ৭৩ ভাগ ঝরে পড়ছে।

[৪] ব্যানবেইস প্রতি বছর মাধ্যমিক ও পরবর্তী স্তরের শিক্ষা পরিস্থিতির ওপর তথ্য-গবেষণার লক্ষ্যে সমীক্ষা পরিচালনা করে থাকে।

‘অ্যানুয়াল সেক্টর পারফরম্যান্স রিপোর্ট’ (এএসপিআর) ২০১৯ নামে প্রাথমিক শিক্ষা পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সে অনুযায়ী প্রাথমিকে বর্তমানে দুই কোটি ৯ লাখ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। অপর দিকে মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থী এক কোটি ৯৭ লাখ ১১ হাজার ৩৬ জন। সেই হিসাবে বর্তমানে দেশে শিক্ষার্থী চার কোটির বেশি।

ব্যানবেইসের প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, মাধ্যমিকে গত বছর শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম।

[৫] ২০১৮ সালে এ ভর্তি হার ছিল ৬৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২ বছরের মধ্যে তুলনা করে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ভর্তি না হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র বেশি।

২০১৮ সালে যেখানে পঞ্চম শ্রেণি পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ ভর্তি হয়েছিল, সেখানে গত বছর ভর্তির হার ৬০ দশমিক ১১ শতাংশ। অবশ্য ছাত্রী ভর্তি হার তেমন একটা কমেনি। ২০১৮ সালে এটা ছিল ৭৪ দশমিক ৬৮ যা, গত বছর ছিল ৭৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

সংস্থাটি ঝরে পড়ার কারণও নির্ণয়ের চেষ্টা করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী এর পেছনে আটটি কারণ আছে।

[৬] এগুলো হচ্ছে- পরিবার অন্যত্র চলে যাওয়া, বইখাতাসহ লেখাপড়ার উপকরণ নষ্ট হয়ে যাওয়া, তাৎক্ষণিকভাবে স্কুলের ব্যয় বহনে অক্ষমতা, বাবা-মাকে গৃহস্থালি কাজে সহায়তা, উপার্জনে বা ভাগ্যান্বেষণে নেমে পড়া, লেখাপড়ায় আর আগ্রহ না পাওয়া, স্কুলে যেতে নিরাপদ বোধ না করা, যাতায়াতে যানবাহন সংকট-সমস্যা।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ছেলে ও মেয়েদের স্কুল ছেড়ে দেয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ বাবা-মাকে ঘরের বা সংসারের কাজে সহায়তা দেয়া।

ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৭ দশমিক ১৫ আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৭ দশমিক ৫৬ শতাংশই বাবা-মাকে ঘরের বা আয়-উপার্জনের কাজে সহায়তার কারণে স্কুল আসে না।

স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে এর পরের সবচেয়ে বড় বাধা দুর্যোগ-পরবর্তী যানবাহনের সংকট। ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ ছেলে এবং ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ মেয়ে এ কারণে স্কুলে যায় না।

উভয়ের ক্ষেত্রে স্কুলে না যাওয়ার তৃতীয় কারণ হচ্ছে লেখাপড়ায় আগ্রহ না থাকা। ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ছেলে এবং ১১ দশমিক ২২ শতাংশ মেয়ে এ কারণে স্কুলে যায় না।

[৭] দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৪২ হাজার ৫২১টি। এসব প্রতিষ্ঠানে এক কোটি ৯৭ লাখ ১১ হাজার ৩৬ জন লেখাপড়া করে। তাদের মধ্যে ৫০ দশমিক ১১ শতাংশ ছাত্রী।

এসব শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছেন পাঁচ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৩ জন। তাদের মধ্যে নারী শিক্ষক ২৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে এক কোটি ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৩ জন।

[৮] তাদের মধ্যে ছাত্রী ৫৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ২১০ জন। এতে ছাত্রী ৪৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মাদ্রাসায় বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থী ২৪ লাখ ৯১ হাজার ২৬৮ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫৫ শতাংশ।

পেশাগত শিক্ষায় ছাত্রছাত্রী এক লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৩ জন। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশই নারী। শিক্ষক শিক্ষায় আছেন ৩৫ হাজার ৩৯ জন, যাদের মধ্যে ৪৬ শতাংশের বেশি ছাত্রী।

আর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ১১ লাখ ১৭৭ শিক্ষার্থী আছে। এতে নারী ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। উল্লিখিত হিসাব অনুযায়ী, মাধ্যমিক পরবর্তী উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিকে লেখাপড়া করে ৪৪ শতাংশ। মাধ্যমিকে ২২ শতাংশ, উচ্চ মাধ্যমিকে ১৫ শতাংশ, স্নাতকে ১৫ শতাংশ, উচ্চশিক্ষায় ৪ শতাংশ।

[৯] সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৮ সালে নিম্ন মাধ্যমিকে নারী শিক্ষার্থী ছিল ৫৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। এটা কমে ২০১৯ সালে হয়েছে ৫৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। মাধ্যমিকে ২০১৮ সালে ছিল ৫১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা ২০১৯ সালে হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

উচ্চ মাধ্যমিকে ২০১৮ সালে ছিল ৪৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা ২০১৯ সালে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

মাধ্যমিক পরবর্তী অন্য ধারার শিক্ষায় আছে ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা ২০১৮ সালে ছিল ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। উচ্চশিক্ষায় স্নাতকে গত বছর ছিল ৪৩ দশমিক ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী, যেখানে ২০১৮ সালে ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর মাস্টার্সে গত বছর ছিল ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা ২০১৮ সালে ছিল ৩৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

[১০]বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বরাদ্দ শিক্ষায়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এটা নেমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। মাঝখানে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এটা বেশ বাড়ানো হয়েছিল।

ওই বছর বরাদ্দ ছিল বাজেটের ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ৮ বছরের মধ্যে এটাই ছিল সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ শিক্ষায়।

উল্লিখিত হিসাবের মধ্যে বিগত ২ বছর ধরে ব্যানবেইস প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দের অর্থ অন্তর্ভুক্ত করেছে।যুগান্তর , সমকাল, ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়