যুগান্তর : [২] জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে ভর্তি হয়ে সমালোচনা ও অবজ্ঞার মুখে পরিবার নিয়ে পালিয়ে গেলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সচালক। শুক্রবার সকালে জেলার তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
আর এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভৈরবে করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তির লাশ টেনে এ অ্যাম্বুলেন্সচালক নিজে আক্রান্ত হয়ে শেষে এখানে ভর্তি হয়েছিলেন। এমন গুজব, আলোচনা-সমালোচনা এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে। এতে তিনি মানুষের সমালোচনা ও অবজ্ঞার মুখে পড়েন।
[৩] তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি হয়েও পালিয়ে যাওয়া রোগীটি ছিলেন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সচালক। তিনি আগে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করতেন।
এ কারণে তার পরিবার তাড়াইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারেই অবস্থান করছিল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি ঠাণ্ডা লেগে জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হলে পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে।
[৪] সেখানে রাতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ ও সমালোচনা ও অবজ্ঞার মুখে পড়েন তিনি। কেউ কেউ এরকম বিষয় উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুক) পোস্টও দেয়।
এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকালে তিনি হাসপাতাল শয্যা ত্যাগ করে পরিবারসহ তাড়াইল উপজেলা ত্যাগ করেন বলে দাবি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
[৫] এ ব্যাপারে কথা হলে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান জানান, করোনা আক্রান্তের খবরটি সম্পূর্ণ গুজব ও ভিত্তিহীন। তিনি ভৈরবে দায়িত্বপালনকালে করোনা আক্রান্ত রোগীর লাশ বহন করে নিজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এমন গুজব- এমনকি ফেসবুকে পাবলিক পোস্টের কারণে বিব্রত হয়ে এলাকা ছেড়েছেন।
সিভিল সার্জন বলেন, ভৈরবের বিদেশ ফেরত প্রবাসীর মৃত্যু করোনা আক্রান্ত হয়ে হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়নি। এরপরও যে কারো এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে এখন চিকিৎসা নিতে এবং সেলফ ও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়।
[৬] তিনি আরও জানান, ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক বর্তমানে পার্শ্ববর্তী শেরপুরে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখানে তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থাও ভালো আছে। এখন পর্যন্ত অন্য কোনো লক্ষ্মণ দেখা দেয়নি।
এ ছাড়া ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওই অ্যাম্বুলেন্সচালক বিদেশফেরত কোনো প্রবাসীর সঙ্গে মিশেছেন কিংবা চলাফেরা করেছেন- এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
সবদিক বিবেচনায় ওই এ্যাম্বুলেন্স চালকের করোনায় আক্রান্তের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।