মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি: [২] নিখিল ঋষি । কান্দিরপাড় জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। থাকেন কুমিল্লার ঋষিপট্টিতে। করোনার প্রভাবে কাজ নেই বললেই চলে। অনাহার-অর্ধাহারে জীবন চলছে। ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।
[৩] গত কয়েকদিন আগে ২ কেজী চাল ১ কেজী আলু ও ১ কেজী টমেটো দিয়ে যায় একটি সংগঠন। তা থেকেই একটু একটু খেয়ে কোনো রকম বেঁচে আছেন। আজ ঘরে চাল নেই। সকাল থেকে কান্দিরপাড় এসে বসে আছেন। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ২০ টাকার কাজ করতে পেরেছেন। নিখিল ঋষি বলেন, দুই কেজী চাউল দিয়া চাইরজন মানুষ চাইর দিন খাইছি- আইজ ঘরে চাল নাই !
[৪] পাশে বসা ঠাকুরদাশেরও একই অবস্থা। গত পনের বছরেও এত অভাবে পড়েন নি। ঘরে খাবার নেই। কান্দিরপাড়ে কাজ নেই। তবুও আশায় বসে আছেন যদি কাজ হয়। ঠাকুরদাসও থাকেন ঋষিপট্টিতে। ঘরে বৃদ্ধ মা-বাবা,স্ত্রী ও তিন সন্তান আছে। দুপুড়ের কড়া রোদে ছাতার নিচে বসে আছেন। দৃষ্টি পড়ে থাকে কেতাদুরস্ত পোষাকি মানুষের জুতার দিকে। সকাল থেকে বসে আছেন। কেউ জুতা বাড়িয়ে দেয় নি। সবাই ধুলা উড়িয়ে সামনে দিয়ে চলে যায়।
[৫] কান্দিরপাড় লিবার্টি মোড়ে নিখিল ঋষি ও ঠাকুর দাশের পাশে দাড়িয়ে থাকা রিকসা চালক জমির হোসেনের দিকে। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকেন নবাববাড়ী চৌমুহনীতে । ভাড়া কমে গেছে। আগের তুলনায় আয় নেই। কথা বলার সময় জমির হোসেন এগিয়ে এসে প্রতিবেদককে বলেন, বাবা নামের লিস্টি (তালিকা) করলে আমার নামডাও দিয়েন বলে নিজের নাম বাবার নাম ঠিকানা বলতে থাকেন জমির হোসেন।
[৬] কান্দিরপাড় লির্বাটি মোড়ে অন্তত ৩০ জন জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। কাজ না থাকায় সবার একই অবস্থা। সরকারি-বেসরকারি সহয়তার জন্য অপেক্ষা করলেও এখনো এসে তাদের হাতে পৌঁছেনি উল্লেখ করার মত কোনো সহযোগিতা। যা এসেছে তা সাবান ,মাস্ক ও হ্যান্ড সেনিটাইজার।
[৭] কান্দিরপাড় লিবার্টি মোড় এলাকা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত। নিম্নআয়ের মানুষদের শুকনো খাবার বিষয়ে ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুল আল আমিন সাদি জানান,আজ রোবাবার থেকে তাদের হাতে খাবার পৌঁছে যাবে।
[৮] কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো:আবুল ফজল মীর জানান,নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সর্বমোট ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষজনের জন্য ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম চলছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :