বাপ্পী রহমান : কোয়ারেন্টাইন নতুন কোনো প্রপঞ্চ নয়। হাল জামানায় শিখতে বাধ্য হলাম ‘লকডাউন’, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। অবশ্য আমার কাছে মনে হয় ‘সামাজিক দূরত্ব’ বললে কেমন যেন একটা দূরে সরিয়ে দেওয়ার ভাব স্পষ্ট হয়। ভাবছি এটা সোশ্যাল ডিসট্যান্স না বলে ফিজিক্যাল ডিসট্যান্স বা শারীরিক দূরত্ব বলা যায় কিনা। সে যা হোক, লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। ব্যক্তি স্বাধীনতা নাকি জননিরাপত্তা? কেউ ভাবছেন সর্বাগ্রে নিরাপত্তা। কারও মতে লকডাউন চরম মাত্রার, কঠোর, আক্রমণাত্মক কিংবা ব্যক্তি স্বাধীনতায় চূড়ান্ত হস্তক্ষেপ। এই বিতর্ক অবশ্য পুরনো। আদত কথা হচ্ছে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং জননিরাপত্তার যে পাল্লাটি রয়েছে তার ভারসাম্য একটি পরিবর্তনশীল সমীকরণের মধ্য দিয়ে পথ চলছে। ইতং... বিতং... শেষতক ইরিন পেজ (২০০৭) তার গবেষণায় জানান দিচ্ছেন, ‘সংক্রমণ যখন মড়কের মোড়কে আবির্ভূত হয় তখন সরকার অসহায় হয়ে পড়ে। মানুষের জীবন বাঁচানো তখন সরকার মুখ্য কাজ হয়ে দাঁড়ায়। ফলত গৌণ হয়ে যায় ব্যক্তির স্বাধীনতা সুরক্ষা করা’। মানছি সে কথা। তবে মৌলিক চাহিদার সুরক্ষা ও জীবিকার প্রবেশগম্যতা যদি সহজলভ্য না হয় তাহলে কী দাঁড়াবে? মণিরামপুরের সহকারী কমিশনারের এই সাত-সতেরো ভাবার বিশেষ সময় ছিলো না বলে দুই বয়স্ক ভ্যানচালককে কানধরে উঠবস করালেন। কেবল তা করেই ক্ষান্ত হননি। ছবিও তুলেছেন। অথচ এই দুর্যোগে কানধরে উঠবস করা উচিত আমাদের যারা তিন বেলা পেটপুরে খেতে পারছি। রোজকার জীবনে আমরা যে সততা দেখাচ্ছি তার খানিকটাও যদি বিশ্বাস করতাম তাহলে সম্ভবত ভোলগার জল গঙ্গা পর্যন্ত গড়াতো না। হায় কপাল! প্রতিনিয়ত নিজের সঙ্গে প্রতারণা করতে করতে ভুলে গেছি আমরাও প্রতারক। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :