ডেস্ক রিপোর্ট : [২] গত শুক্রবার রাতে প্রচণ্ড জ্বরে অচেতন হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার জন্য তার স্ত্রী প্রতিবেশীদের সাহায্য চাইলেও করোনা আতঙ্কে কেউ এগিয়ে আসেননি। এমনকি একের পর এক হটলাইনে ফোন দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি। প্রথমআলো,প্রিয়ডটকম,খবর২৪ডটকম
[৩] অবশেষে চিকিৎসা বঞ্চিত হয়েই গতকাল সকালে চোখের সামনে মারা যান ওই ব্যক্তি। গতকাল দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন।
[৪] মৃতের স্ত্রী জানান, শুক্রবার রাতে তার স্বামীর অবস্থার অবনতি হলে তিনি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জেলা ও উপজেলার হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কেউ তার ডাকে সাড়া দেননি।
[৫] শিবগঞ্জের ইউএনও জানান, একজন চিকিৎসা কর্মকর্তাকে ওই ব্যক্তির বাড়িতে পাঠানো হলে তিনি তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) খবর দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত ওই ব্যক্তির পরিবার কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। এ ছাড়াও আশপাশের ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি লকডাউন থাকবে।
[৬] মৃতের স্ত্রী আরও জানান, মধ্যরাতে তার স্বামী প্রচণ্ড জ্বরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। দিশেহারা হয়ে এরপর তিনি একে একে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শিবগঞ্জ থানার পুলিশ, শিবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে ফোন দেন সহযোগিতার জন্য। কোনো সাড়া না পেয়ে আইইডিসিআরের হটলাইনে ফোন দেন। কিন্তু লাইন পাননি। পরে ফোন দেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের হটলাইনে।
[৭] হটলাইনে বিষয়টি জানার পর এগিয়ে আসেন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসাক শফিক আমিন। তিনি বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীকে জানান। পরে সিভিল সার্জন একজন চিকিৎসাককে ওই ব্যক্তির বাড়িতে পাঠান।
[৮] মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিক আমিন বলেন, ‘হাসপাতালের হটলাইনে ফোন করা নারীর বর্ণনা শুনে মনে হলো, মানবতার কাছে আমরা হেরে গেছি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হোক বা না হোক, একজন নাগরিক হিসেবে তার চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা কেউ তার পাশে দাঁড়াতে পারিনি। আমি নিজেও সকাল থেকে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। শেষে সিভিল সার্জন ও পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম