সুজন কৈরী : [২] গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- চক্রের মূলহোতা কাজী আবুল কাশেম, তার ছেলে রহমত ও ভাগ্নে সোহান। চক্রটি গত কয়েক বছরে বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে চুরি করেছে শত শত ভরি স্বর্ণালঙ্কার।
[৩] জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিলের মহানগর আবাসিক এলাকার একটি বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ ভরি সোনার গয়না ও নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি হয়। এর আগে ১৯শে ফেব্রুয়ারি একই এলাকার আরেকটি বাসা থেকেও চুরি হয় ২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা।
[৪] ওই ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় মামলা হলে অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ। তদন্তকালে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের ১১৪টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ। ফুটেজে চুরি হওয়া বাড়ির সামনে পাঞ্জাবি পড়া এক লোককে ঘোরাফেরা করতে দেখতে পায় পুলিশ। প্রথমে বাড়িতে ঢোকে এক যুবক। কিছুক্ষণ পর ঢোকে পাঞ্জাবি পড়া লোকটিও। ৭ মিনিট ৪২ সেকেন্ড পর কাধে ব্যাগ নিয়ে প্রথমে যুবক ও এরপরই পাঞ্জাবি পড়া লোকটি বেরিয়ে আসে। এরপর বাইরে অপেক্ষারত
একজনের মোটরসাইকেলে করে তারা এলাকা ছাড়েন।
[৪] শনাক্তের পর ওই তিনজনের মধ্যে রহমত ও সোহানকে ২০শে মার্চ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পরদিন রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে চুরিতে ব্যবহৃত মোটরসাইকলেসহ গ্রেপ্তার করা হয় কাশেমকে।
[৫] ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি হাফিজ আল ফারুক বলেন, চক্রের মূলহোতা কাশেম চুরির টাকায় বনশ্রীতে ১৬শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছেন। উত্তরখান এলাকায় সাড়ে তিনকাঠা জায়গায় তিনতলা বাড়ি ছাড়াও কিনেছেন তিনটি প্লট। কাশেমের বড় ছেলে ও স্ত্রী দুবাই থাকেন। আর দুই মেয়ে পড়ালেখা করে দেশের নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ১৫ বছর ধরে তারা চুরি করছেন। এই সময়ে রাজধানীর প্রায় ৫০০ বাসায় চুরি করেছেন তারা। চুরির জন্য বিদেশ থেকে ছেলে ও ভাগ্নেকে ফিরিয়ে আনেন।
[৬] ঘটনার তদন্তকালে পুলিশ জানতে পেরেছে, চক্রের মূলহোতা হাতিরঝিল, রামপুরা, খিলগাঁও, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, ডেমরাসহ বিভিন্ন মহল্লায় ঘোরাঘুরি করতেন, সে রেকি করে বারান্দায় কাপড় শুকাতে দেয়া আছে কি না বা লাইট জ্বলে কি না এসব দেখে তারা বুঝতেন যে, বাসার কেউ হয়তো বাড়িতে নেই। এরপর ভাড়াটে হিসেবে তথ্য আনতে তারা টার্গেট করা ওই বাসায় গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীরা কাছে থেকে বাসায় কেউ থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হন।