মাজহারুল ইসলাম : [২] তারপরও ক্রেতার অভাব নেই। কারণ দেশে গুজব রটেছে ‘গভীর রাতে থানকুনি পাতা খেলে করোনা ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ মিলবে। আর তাই হঠাৎ এর চাহিদার এবং মূল্য বেড়েছে।
[৩] এমন গুজবে দক্ষিণ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ তথ্য যাচাই-বাছাই না করে সারারাত থানকুনি পাতা খুঁজেছেন আর খেয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা স্বজনদেরও গভীর রাতে ফোন করে ঘুম ভাঙিয়ে খেতে বলেছেন। এ অবস্থায় গতকাল রাজধানীতেও থানকুনি পাতার দাম ১০ থেকে ১২ গুণ বেড়ে গেছে।
[৪] এমন গুজবের সৃষ্টি কোথা থেকে, স্পষ্ট করে তা জানা না গেলেও গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই বরগুনায় থানকুনি পাতা সম্পর্কে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ গুজব প্রকট আকার ধারণ করে। মধ্যরাতে মসজিদের মাইকে মাইকে থানকুনি পাতা খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে ওই গুজবের উৎপত্তি হলেও দ্রæত তা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
[৫] জানা যায়, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার গভীর রাতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ফজরের নামাজের আগে ৩টি থানকুনিপাতা খেলেই মুক্তি পাওয়া যাবে করোনাভাইরাস থেকে। এর পর রাত ২টা থেকে ফজর নামাজের আগ পর্যন্ত পাতা খাওয়ার হিড়িক চলে।
[৬] থানকুনিপাতা খেয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত ৩টায় ফোন দিয়ে স্বজনরা জানান, থানকুনিপাতা খেলে করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকা যাবে। আর তাই তারা রাতেই পাতার সন্ধানে নামেন এবং বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের জঙ্গল থেকে পাতা তুলে খেয়ে নেন।
[৭] এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ভোররাত থেকেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ানবাজারের গিয়ে থানকুনি পাতা কিনতে থাকেন লোকজন। ভোরের আগেই সব বিক্রি হয়ে যায়। পরবর্তীতে সাভার, গাজীপুর ও কাপাসিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আবারও থানকুনি পাতা আনা হয়।
[৮] এ বিষয়ে উজিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শওকত আলী বলেছেন, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে থানকুনিপাতার অনেক গুনাগুণ থাকলেও ৩টি পাতা খেলে করোনভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এর কোনও সত্যতা নেই।
[৯] একই বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আবদুল বাতেন বলেন, কোন আলেম বা পীরথানকুনিপাতা খেতে আদেশ দিয়েছেন, এমনটি হদিসে পাওয়া যায়নি। এ পাতা খেলে রোগমুক্তি হবে, ইসলামেও এমন তথ্যেরও ভিত্তি নেই।
আপনার মতামত লিখুন :