শিরোনাম
◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২০, ০৮:৪৫ সকাল
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০২০, ০৮:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] করোনা ভাইরাস আতঙ্কে নির্বাচন পেছাতে পারে

আমাদের সময় : [২] বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষায় বিশেষজ্ঞরা জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম সিটি ও কয়েকটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের আয়োজন ও প্রচার। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিইনি। করোনা ভাইরাস কতখানি প্রভাব ফেলবে, সেটি বিশ্লেষণ করতে চাচ্ছি। আরও এক-দুদিন দেখব। তার পর নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

[৩] ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। বুধবার পরিস্থিতি দেখে সেদিনই কিংবা বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। ২১ মার্চ ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে ২৯ মার্চ। ভোটের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকায় ঢাকার উপনির্বাচন করে ফেলতে চায় নির্বাচন কমিশন। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে ভিন্ন চিন্তাও সিইসি রাখছেন।

[৪] এক প্রশ্নে সিইসি বলেন, ২১ মার্চের নির্বাচনের চিন্তা আছে এখনো। যদি পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, অবশ্যই বিবেচনা করব; কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা চাচ্ছি নির্বাচনটা হয়ে যাক।

[৫] ভোটের প্রচারে সতর্কতার কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি তো শেষের দিকে। প্রার্থীরা বলেছেন, তারা সাবধানে প্রচার করছেন; কিন্তু নির্বাচন যেন বন্ধ না হয়ে যায়। তাদের অনুরোধও আছে। আমরা বলেছি, তারা যেন জনসমাগমের বিষয়টি এড়িয়ে চলেন। যেন বিকল্পভাবে ভোটারদের কাছে ভোট চান, জনসমাগম না করেন।

নির্বাচনে কাজ করতে অনেক কর্মকর্তা অনীহা প্রকাশ করেছেন। ইসি কর্মকর্তারাও ভোট পেছানোর জন্য বলছেন।

[৬] যুক্তি হিসেবে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিসাইডিং-সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা) অনাগ্রহের কথাও তুলে ধরেন। অনেক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্বাচনী ডিউটি করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

[৭] করোনা আতঙ্ক ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত হবে কিনা তা নিয়ে স্থানীয় নাগরিকরাও সংশয়ে। প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা বললেও দায়িত্ব পালনকারী সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা করোনা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন।

[৮] সাধারণ ভোটার, পুলিশ কর্মকর্তা ও রাজনীবিদ থেকে সচেতন নাগরিকদের মতামতÑ ইভিএম মেশিনে একটি বাটন টিপে হাজার হাজার ভোটার ভোট দেবেন। তাদের একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অন্য সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা থাকবে। আর করোনা ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক থেকে ভোটাররা কেন্দ্রে না-ও যেতে পারেন। সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপনির্বাচনে শহর এলাকায় ভোট পড়ে মাত্র ১৬ শতাংশ। এরমধ্যে প্রিসাইডিং অফিসারের ৫ শতাংশ ভোট দেওয়ার নিয়ম ছিল। তা বাদ দিলে মোট ভোট পড়ে ১১ শতাংশ। তখন করোনা আতঙ্কের মতো কোনো বিষয় কাজ করেনি। তবে এবারের নির্বাচনের আগে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন স্থগিতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দাবি উঠছে।

[৯] চট্টগ্রাম নির্বাচনী কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, করোনা আতঙ্ক নিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছি। মাঠ পর্যায়ে যেখান থেকে যে তথ্য পাচ্ছি তা সংগ্রহ করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা অবহিত করছি। নির্বাচনের ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্ত না আসার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আমরা আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে নেব।

জানা গেছে, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও আনসারসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে তাদের উদ্বেগের কথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তারা এক ধরনের ঝুঁকি অনুভব করছেন বলেও জানিয়েছেন।

[১০] চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, সিইসি চট্টগ্রামে এসেছিলেন। তিনি সবার সঙ্গে কথা বলে করোনার প্রভাব সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছেন। আমরাও উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন বিভাগকেও জানিয়েছি। পুলিশ সদস্যরা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমরা তা মেনে কাজ করব।

[১১] করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য সংক্রমণ নিয়ে গত রবিবার রাতে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান মেয়রপ্রার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বিএনপির প্রতিনিধিরা নির্বাচন অনুষ্ঠান কিংবা বন্ধ রাখার ব্যাপারে স্পষ্ট মন্তব্য করেননি। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতিনিধি চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দেন। খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি বলেছিÑ করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক চলছে; কিন্তু তা তো কোথাও দেখা যাচ্ছে না। কাজেই এখনই আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার দরকার কী। তবে করোনা যদি এসেই থাকে, তবে নির্বাচন কমিশন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে পারে। এ নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা থাকবে না।

[১২] ইভিএমে ভোট দেওয়ার সময় করোনা ভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করেনা ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে ইভিএম কেন, ম্যানুয়েল পদ্ধতিতেও তো ছড়াতে পারে। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য কোনোভাবেই কেবল ইভিএম পদ্ধতিকে দায়ী করা যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়