মুসা কলিম মুকুল: রাষ্ট্রকে কখনো কখনো জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়। তখন কয়েকটি কিংবা সবগুলো সাংবিধানিক মানবাধিকার স্থগিত করতে হয়। এটা করতে হয় বিপদের দিনে দেশ ও দেশের মানুষের ভালোর জন্য। করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার জন্য বিদেশফেরত একজন নাগরিককে এই মুহূর্তে দুই সপ্তাহ সম্পূর্ণ আলাদা রাখার প্রয়োজন। এটাই এই সময়ের প্রধান কাজ। বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে একজন ব্যক্তির জন্য অমানবিক লাগলেও দেশের বৃহত্তর ভালোর জন্য তাই প্রয়োজন। এমনকি পরিস্থিতি যদি চায়, দেশের ছেলেমেয়ে এই মুহূর্তে দেশেই ফিরতে পারবে না তাহলে রাষ্ট্রকে তাই করতে হয়।
‘মানুষের প্রয়োজনে মানবাধিকার স্থগিত করা’ বিষয়টি শুনতে হাস্যকর লাগলেও বাস্তবতা কখনো কখনো অমনই। ইউরোপের অনেক দেশে করোনার ভয়ে এখন ছুটি। কাজ নেই। তো একজন বাঙালি চলে এলেন বাড়ি। তাকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বাড়ি ফিরেই ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা’ বলে খেয়া ঘাটে, বটতলায়, হাটে, গঞ্জে জনে জনে কদমবুসি আর কোলাকুলি করে বেড়াচ্ছেন, দই-সন্দেশ, পান-বিড়ি খাচ্ছেন আর বিলাচ্ছেন- এমন দেশভক্তি দেখে যতোই ধন্যি ধন্যি লাগুক পুরো দেশের দীর্ঘমেয়াদি বাঁশ যাওয়ার সূচনা এখান থেকেই ঘটে যেতে পারে। বিদেশফেরত নাগরিকদের আকছার দেখা যাচ্ছে এমন সর্বনেশে দেশপ্রেমে মত্ত থাকতে। তাহলে দেশের ভালোর জন্য সরকারের কী করা উচিত? করোনা ভয়ংকর এক ভাইরাস। করোনা মহামারী হয়ে গেলে বাংলাদেশর # দিন আনা দিন খাওয়া বিরাট জনগোষ্ঠী বিনা চিকিৎসায় কেবল নয়, না খেয়েও মরবে দেদার। করোনাকে রুখতে হবে। বিরাট সমন্বিত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা ছাড়া বাড়িতে খালি মাস্ক আর সাবান মজুদ করে করোনা ঠেকানোর ব্যক্তিগত চেষ্টা হাস্যকর। একে রুখতে রাষ্ট্রকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা নাগরিকদের জন্য এখন জরুরি কর্তব্য। মানবাধিকার স্থগিত দেখে হৈচৈ করলেই কেউ বিরাট মানবদরদী হয়ে যায় না। তবে রাষ্ট্রের জরুরি অবস্থার সময়ে দায়িত্ববান সরকার, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানসমূহ ও সরকারের পার্টি খাটতে খাটতে সারা হয়, ঘুম হারাম করে ফেলে। সুযোগসন্ধানী সরকার কিন্তু আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :