আরিফ জেবতিক: ইতালি থেকে আসা যাত্রীদের আলাদা করার সিদ্ধান্তটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। তবে যাত্রীদের উগ্র আচরণের কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার আগে দ্বিতীয়বার ভাবুন। যাত্রীদের হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের কোনো রকম ব্রিফিং দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ যাত্রায় ক্লান্ত, পরিবার, পরিজন, শিশু ও মহিলা সঙ্গে নিয়ে আসা লোকজন জানতেন না যে তাদের সেখানে কতো ঘণ্টা নাকি কতোদিন কাটাতে হবে। সেখানে কোনো খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা ছিলো না। এখন বলুন, আপনার কোলে যদি বাচ্চা থাকে এবং সেই বাচ্চা অভুক্ত থাকে এবং আপনি যদি না জানেন যে এখান থেকে আপনি কখন বের হতে পারবেন, তাহলে আপনার মনোভাব কেমন হতে পারে? (আর হজ ক্যাম্পের পরিবেশ সম্পর্কে সেখানে যারা কখনো গেছেন তারা ভালো জানেন। বিশাল ভবন, কিন্তু তেমন কোনো সুবিধা নেই। আমি বছর কয়েক আগে গিয়েছিলাম। বাথরুমগুলোর অবস্থা যাচ্ছেতাই, থাকার জায়গায় মশা ভনভন করে। আমি জানি না, এসব ঠিক করা হয়েছে কিনা। যদি হয়ে থাকে তাহলে ভালো, যদি ঠিক না হয়ে থাকে তাহলে যেকোনো মানুষই সেখানে গেলে মাথা ঠিক থাকবে না)।
দুর্ভাগ্য হচ্ছে জাতিগতভাবে আমাদের, বিশেষ করে সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা দৃষ্টিকটুভাবে কম। যাত্রীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া মাত্র তাদের ব্রিফিং করা উচিত ছিলো যে কেন তাদের এখানে আনা হয়েছে এবং কতোদিন রাখা হবে। তাদের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা যেমন খাবারদাবার, বিশ্রামের জায়গার ব্যবস্থা করে দেওয়ার দরকার ছিলো। থিতু হয়ে বসার পর বাদবাকি কাজকর্ম শুরু করা যেতো। যা হয়েছে তার জন্য আসলে আমাদের অব্যবস্থাপনাই দায়ী। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতাকে আমি মেনে নিই, হয়তো হজ ক্যাম্পের চাইতে ভালো জায়গা আমাদের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব নয়, কিন্তু অব্যবস্থাপনাকে কেন মেনে নিতে হবে? সুতরাং যারা ইতালি থেকে দেশে ফিরে হজক্যাম্পে অন্তরীণ হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন, তাদের প্রতি মানবিক হোন। তবে ওই নীল গেঞ্জি পরা লোকটার প্রতি মানবিক না হলে আমি বেশি আপত্তি করবো না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :