শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১২ মার্চ, ২০২০, ০৬:২৫ সকাল
আপডেট : ১২ মার্চ, ২০২০, ০৬:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ‘নিষিদ্ধ’ ক্লোনের রমরমা বাণিজ্য!

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] ১৯৯৬ সালে ক্লোন ভেড়া ডলির জন্মের খবর প্রকাশের পর সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গিয়েছিল। পুরুষের ভূমিকা ছাড়াই মানুষের মতো উন্নত প্রাণীর বংশবিস্তার সম্ভাবনাকে হাতের মুঠোয় এনে দেয় বিজ্ঞান। এরপর বিভিন্ন অধিকার সংগঠন আপত্তি ও সম্ভাব্য নৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা বলে প্রাণীর ক্লোন নিয়ে প্রকাশ্য গবেষণা বন্ধই হয়ে গেছে বলা চলে। এ ঘটনার পর মানব ক্লোন নিয়ে প্রচুর সিনেমা হয়েছে, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর শেষ নেই। তাই বলে বাস্তবে এ গবেষণা যে হচ্ছে না তা কিন্তু নয়। হচ্ছে তো বটেই; এটি রীতিমতো লাভজনক বাণিজ্যে পরিণত করেছে বেশ কয়েকটি কোম্পানি। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ভায়াজেন পেটস। এরা বিভিন্ন পোষা প্রাণীর ক্লোন করে থাকে। এর জন্য মালিককে গুণতে হয় ন্যূনতম ৫০ হাজার ডলার। বণিক বার্তা

[৩] পোষা প্রাণীর বাণিজ্যিক ক্লোনের বিষয়টি সম্প্রতি আবার আলোচনায় এসেছে ক্যালিফোর্নিয়ার এক দম্পতিকে নিয়ে সান দিয়েগো ভিত্তিক কেজিটিভি একটি প্রতিবেদন সম্প্রচারের পর। এসকোনডিডোর বাসিন্দা অ্যালিসিয়া ও ডেভিড দম্পতি তাদের প্রিয় পোষা কুকুর মার্লের ক্লোন করেছেন। তারা জানান, এটি মার্লের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম। অ্যালিসিয়া যখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন তারা একদিন মার্লেকে নিয়ে হাইকিং গিয়েছিলেন। উঁচু থেকে নামার সময় একটি লাঠি দেখে সেটি ধরার জন্য এগোতে থাকেন অ্যালিসিয়া। এমন সময় মার্লে ওই স্থানের মাটি নখ দিয়ে আঁচড়াতে থাকে। আর তখনই অ্যালিসিয়া খেয়াল করে অদূরেই লুকিয়ে আছে বিষধর র‌্যাটল স্নেক। মার্লের কারণে নির্ঘাত মৃত্যু থেকে বেঁচে যান অ্যালিসিয়া ও তার অনাগত সন্তান।

[৪] প্রায় পাঁচ বছর আগে মার্লে তাদের ছেড়ে চলে গেছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ল্যাব্রাডর কুকুরটি। মার্লেকে ছাড়া তাদের পরিবার ছিল অসম্পূর্ণ। পোষাপ্রাণী ক্লোনিং প্রতিষ্ঠান ভায়াজেন পেটসের এর সহায়তায় তারা ফিরিয়ে আনেন মার্লের ক্লোন কপি জিগ্গিকে। এতে তাদের খরচ হয় ৫০ হাজার ডলার।

[৫] এই দম্পতির বসার ঘরে চোখে পড়ে দুটি ছবি। একটিতে পোষা কুকুরের সামনে শুয়ে আছে তাদের কয়েক মাস বয়সী মেয়ে। আরেকটিতে কুকুরটিকে ঘিরে আছে দুটি মেয়ে। কুকুর দুটি দেখতে একই রকম মনে হলেও তারা আলাদা। প্রথমটি হলো মার্লে আর পরেরটি জিগ্গি। তবে এই জিগ্গি মার্লের ক্লোন। অ্যালিসিয়া জানান, তাদের স্বভাব চরিত্রও অভিন্ন এবং একই খেলনা পছন্দ করে। এটা তার কাছে মনে হয়, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়!

[৬] মানুষের ক্লোন আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবে পোষা প্রাণীর ক্লোন এখন সাধারণ ঘটনা। ২০১৮ সালে মার্কিন অভিনেত্রী ও সঙ্গীত শিল্পী বারবারা স্ট্রিস্যান্ড জানান,তার দুটি কুকুরের একটি তার আগেরটির ক্লোন। দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি স্নিফার কুকুর তার স্বতন্ত্র গঠনের নাকের জন্য বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল। এই কুকুরের সাতটি ক্লোন করা হয়েছিল। নিউইয়র্কে নাইন ইলেভেনে সর্বশেষ জীবিত ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে খুঁজে বের করে জাতীয় হিরো বনে গিয়েছিল ট্র্যাকার নামে একটি কুকুর। ২০০৯ সালে তার পাঁচটি ক্লোন করা হয়।

[৭] ভায়াজেনের ক্লোন কুকুর বা বিড়াল জন্ম দেয়ার প্রক্রিয়াটি দুই যুগ আগে ডলির জন্ম প্রক্রিয়ার মতোই। যে প্রাণীটির ক্লোন করা হবে সেটি জীবিত থাকা অবস্থায় বা মৃত্যুর অব্যহিত পর একজন বিশেষজ্ঞ পশু চিকিৎসক তার কোষের নমুনা সংগ্রহ করেন। সেই নমুনাটি কালচার করে আরো জীবিত কোষ তৈরি করে তা সংরক্ষণ করে ভায়াজেন।

[৮] এরপর মালিক তাদের প্রিয় পোষ্যের ক্লোন করার সিদ্ধান্ত নিলে ভায়াজেন একটি নারী কুকুরের ডিম্বাণুর নিউক্লিয়াসের স্থলে ওই সংরক্ষিত কোষগুলোর একটি প্রতিস্থাপন করা হয়। এই ডিম্বাণু ও পোষ্যের কোষ মিলিত হয়ে জাইগোট তৈরি হয় এবং ভ্রুণের বৃদ্ধি শুরু হয়ে যায়। ভ্রূণটিকে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে পরিণত করতে সেটি স্থাপন করা হয় একটি সারোগেট মা অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী কুকুরের জরায়ুতে। এই সারোগেট মায়ের পেটেই বড় হয় ক্লোন শিশুটি এবং নির্দিষ্ট গর্ভকাল শেষে স্বাভাবিকভাবে ভূমিষ্ঠ হয়। যেহেতু মূল কুকুরের জিনে কোনো পরিবর্তন আনা হয় না, সেহেতু ক্লোনটি তার হুবহু তার মতোই হয়।

[৯] অবশ্য এ নিয়ে পেটা ও হিউম্যান সোসাইটি অব দ্য ইউনাইটে স্টেটসের মতো সংগঠনের আপত্তি রয়েছে। তার এ প্রক্রিয়াকে অনৈতিক বলে মনে করে কারণ এখানে মানুষ তাদের উদ্দেশ্য সাধনে প্রাণীদের ব্যবহার করছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রাণী নিগ্রহের শিকার হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা। তবে ভায়াজেন বলছে, ক্লোন প্রক্রিয়ায় জড়িত প্রাণীগুলোর যথেষ্ট যত্ন নেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তাদের ব্যাপারে খুবই সচেতন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়