সুজন কৈরী : [২] আগুনের লাল শিখায় সবকিছু পুড়ে গেলেও নেভেনি সোনালী স্বপ্নটুকু। ধ্বংসস্তুপের উপরই আবারো নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন রুপনগর বারেক বস্তির হাজারো শ্রমজীবী মানুষ।
[৩] রিকশা চালক নয়ন, দিনমজুর আমির হোসেন, পোশাক শ্রমিক রোজিনা বা গৃহকর্মী নাহারের মত হাজারো শ্রমজীবী মানুষে বসবাস করেন রুপনগর বারেক বস্তিতে। কেউ কেউ এখানে থাকছেন দীর্ঘ ৩০/৪০ বছর ধরে। এই বস্তিতেই জন্ম বেড়ে উঠা বিয়ে হয়ে সন্তানের বাবা-মাও হয়েছেন অনেকে। তাই গভীর আত্নিক সম্পর্ক বস্তির মাটির সাথে এখানকার মানুষের।
[৪] বুধবার আগুনের তান্ডবে কয়লা আর ছাইয়ের স্তুপে পরিনত হয় হাজারো মানুষের সংসার। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নেন অনেকে।
[৫] বস্তির বাসিন্দা নীলু নামের একজন পোশাক শ্রমিক জানান, সবকিছু পুড়েছে তো কি হয়েছে, এখানেই থাকবো। পুড়ে যাওয়া এই কয়লার উপরই কাপড় দিয়ে ছাউনি বানিয়ে তার নীচে রাতটি কাটিয়ে দিব। এরপর বাড়িওয়ালা যদি ঘড় তুলে দেয় তো ভালো না হলে নিজেরাই বাঁশ আর বেড়া দিয়ে আবার ঘড় তুলবো।
[৬] একই কথা বল্লেন নিলুফা নামের আরেক বস্তিবাসী। তিনি বলেন, আগুনে সব কিছু পুড়ে গেলেও আবারো তারা তিলে তিলে সব গড়ে নিবেন। হয়তো কষ্ট হবে খুব, কিন্তুু তারা পারবেন। তারা জানান, গত ৩৫ বছর ধরে তিনি এই বস্তিতে থাকছেন। এখানেই তার জন্ম। এখানেই বিয়ে। এখন তার দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে এই বস্তিতেই থাকছেন তিনি। গত নির্বাচনের আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য তাদেরকে আশ^াস দিয়েছিলেন, বস্তি উচ্ছেদ করা হবে না। আমরাও তাই বিশ^াস করি।
[৭] নীলু বা নিলুফার মতই দৃঢ় মনোবল দেখা গেলো ঘড় তৈরীর মিস্ত্রি হৃদয়সহ রিকশা চালক শাহাবুদ্দিনেরও। খেটে খাওয়া এসব মানুষগুলোর চোখে সব হারানোর বেদনার সঙ্গে ছিল ঘুড়ে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ও।
[৮] বুধবার সকালে রুপনগরের বারেক বস্তিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের দীর্ঘ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। আগুন লাগার কারন জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা জানিয়েছেন, এখানে ১০ হাজারেরও বেশী কাঁচা ও আধাপাকা ঘড় আছে। কক্ষ আছে ৪০ হাজারেরও বেশী।
আপনার মতামত লিখুন :