শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১১ মার্চ, ২০২০, ০৬:৫৭ সকাল
আপডেট : ১১ মার্চ, ২০২০, ০৬:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না, গুজব ছড়াবেন না, শুধু সতর্ক থাকবেন

 

প্রভাষ আমিন: পরিচ্ছন্নতাটা আমাদের নিত্যদিনের চর্চা হওয়া উচিত। কিছু ধরা বা খাওয়ার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। বাসায় ফেরার পর প্রথম কাজ হলো হাত ধুয়ে ফেলা। চেষ্টা করতে হবে যতোটা সম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলতে। অপ্রয়োজনে বাসার বাইরে না যাওয়া, স্বল্প দূরত্বে হেঁটে যাওয়াই ভালো। গণপরিবহনে চড়লেও যথাসম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। যেখানে-সেখানে হাত দেওয়া যাবে না। বাসের হাতল, সিট, সিঁড়ির রেলিং, আপনার নিজের গাড়ির দরজা, লিফটের বাটন, এমনকি ঘরের দরজার হাতল ধরতেও সাবধান। যেকোনো জায়গায় ভাইরাস থাকতে পারে। কোথাও হাত দিতে বাধ্য হলে যতো দ্রুত সম্ভব ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। হাত না ধুয়ে এমনকি নিজের মুখ, চোখ, নাক স্পর্শ করা যাবে না। আপনার হাত থেকেই ভাইরাসটি আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বিপদ কিন্তু সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে। টাকা-পয়সা হাতের ময়লা।

টাকা ধরলে সেই ময়লা ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে কয়েকদিন টাকা এড়িয়ে চলুন। কার্ড মানে প্লাস্টিক মানি থাকলে ব্যবহার করুন। আপনার নিত্যসঙ্গী মোবাইলটিকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। সবচেয়ে বড় সতর্কতা হলো হাঁচি-কাশি দেওয়া। কোনোভাবেই প্রকাশ্য বাতাসে হাঁচি বা কাশি দেবেন না। রুমাল বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন। ব্যবহারের পর টিস্যু যেখানে সেখানে ফেলবেন না। কিছু না থাকলে হাত দিয়ে আড়াল করে হাঁচি বা কাশি দিন। পরে হাত পরিষ্কার করে নেবেন। যেখানে সেখানে কফ বা থুথু ফেলবেন না।
খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। চেষ্টা করতে হবে কাঁচা কিছু না খাওয়ার। খেলেও ভালো করে না ধুয়ে কিছুই খাওয়া যাবে না। সব খাওয়ার ভালো করে সিদ্ধ করে খেতে হবে। অর্ধসিদ্ধ মাছ, মাংস বা ডিম খাওয়া যাবে না। রাস্তাঘাটে যেখানে-সেখানে কিছু খাওয়া যাবে না। হাত মেলানো বা বুক মেলানোর সৌজন্যটা আপাতত শিকেয় তুলে রাখুন। মাথা ঝাঁকিয়ে বা কনুই বা মুষ্ঠি মিলিয়ে আপাতত কাজ সারুন। প্রেম-ট্রেমও ক’দিন একটু সাবধানে করুন। প্রিয়জনের চুমুও আপনার বিপদের কারণ হতে পারে। তাই সাবধান। আপনি যেন আপনার প্রিয়জনের বিপদের কারণ না হন। যদি আপনার শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা জ্বর-সর্দি-কাশি হয় দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান।

এতোক্ষণ যেসব সাবধানতা বা পরিচ্ছন্নতার কথা বললাম, তা কিন্তু নতুন কোনো কথা নয়। আমাদের সবসময়ই পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত। ইসলাম ধর্মে পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়। মুসলমানরা দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে অজু করলেও অনেকটা নিরাপদ থাকতে পারেন।
আমি অনেককে হাসতে হাসতে বলেছি, আমার বাসায় কখনো করোনা ঢুকতে পারবে না। করোনা ঠেকাতে যা যা সাবধানতার কথা শুনছি, আমার স্ত্রী মুক্তি গত ২৫ বছর ধরে আমাদের উপর তা প্রয়োগ করছেন। তিনি বাজার থেকে আপেল কিনলেও সেটা পারলে সাবান দিয়ে ধুয়ে নেন। তার এই পরিচ্ছন্নতাবাতিক নিয়ে আমরা সবসময় হাসাহাসি করি। এবার তিনি আমাদের নিয়ে হাসবেন। তবে করোনা হলে সবার আগে আমার হবে। সারাক্ষণ চোখে, নাকে মুখে হাত দেওয়ার বদভ্যাস আমার বহু পুরনো। এবার যদি করোনার ভয়ে এই বদভ্যাসটা দূর হয়।

এতোক্ষণ যা বললাম, তার কোনোটাই কিন্তু অসম্ভব নয়, ভয়ংকরও নয়। করোনাকে যতোটা বিপজ্জনক হিসেবে চিত্রিত করা হচ্ছে, করোনা কিন্তু ততোটা নয়। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার একদম কিছু নেই। প্রথম কথা হলো করোনার মৃত্যুহার দুই শতাংশের মতো। এর চেয়ে বেশি মৃত্যুহারের অনেক রোগের সঙ্গে আমাদের নিত্য বসবাস। বাংলাদেশের সড়কগুলো বরং করোনার চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক। ঝুঁকিটা যদি আরও ছোট করে আনি তাহলে দেখা যাবে শিশু, তরুণ, যুবকরা করোনার টার্গেট নয়। করোনায় সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে আছে বয়স্করা। বিশেষ করে যারা আগে থেকেই বক্ষব্যাধি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা কিডনির কোনো জটিল অসুখে ভুগছেন, করোনা তাদের জন্য একটু বেশি ঝুঁকির। তাই আপনার পরিবারের প্রবীণ সদস্যের দিকে একটু বাড়তি নজর রাখুন। তাকে চোখে চোখে রাখুন। বাইরে যেতে দেবেন না। ব্যস তাহলেই কিন্তু ঝুঁকি অনেকটাই কমে গেলো।

করোনা মোকাবেলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। যেহেতু এখনো কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি, তাই প্রাথমিকভাবে ডাক্তাররা উপসর্গের চিকিৎসা দেবেন। যেহেতু একটু দেরি করে বাংলাদেশে এসেছে, তাই সরকার প্রস্তুতি নেওয়ারও সময় পেয়েছে বেশি। একাধিক হাসপাতাল আলাদা করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অনেক হাসপাতালে করোনা কর্নার বানানো হয়েছে। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না, গুজব ছড়াবেন না, খালি সতর্ক থাকবেন। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়