শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১০ মার্চ, ২০২০, ০৭:০২ সকাল
আপডেট : ১০ মার্চ, ২০২০, ০৭:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

(১)পুঁজিবাজার নিয়ে কারা খেলছে!

ডেস্ক রিপোর্ট :(2) দেশে করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পরের দিনই বিরাট ধসের কবলে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সূচক প্রায় ৩০০ পয়েন্ট হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে পুঁজিবাজার। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারো পুঁজি হারানোর আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পতনের গতিও তীব্র হতে দেখা গেছে। দাম বেড়েছে মাত্র ২টি কোম্পানির শেয়ারের। আর সবগুলো কোম্পানির দামই কমেছে রেকর্ড পরিমাণ। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক প্রথম ৬ মিনিটের লেনদেনে হারায় ১০০ পয়েন্ট। বেলা ১১টায় সূচকটি ১৫০ পয়েন্ট হারায়।

(3)১১টা ১৬ মিনিটে উধাও হয় ২০০ পয়েন্ট। দিন শেষে ২৭৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে এসে থেমেছে। সাত বছর আগে ২০১৩ সালের ২৭শে জানুয়ারি নতুন এই সূচক চালু হওয়ার পর এত বড় ধস দেখা যায়নি। এর আগে ২০১৩ সালের ৩রা মার্চ ডিএসইএক্স ২০৭.৩ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল। এতদিন সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় ধস। ডিএসইএক্স ?সূচকের আগে ডিএসই জেনারেল ইনডেক্সকে (ডিজিইএন) এ বাজারের প্রধান সূচক গণ্য করা হত। দুই সূচক মিলিয়ে হিসাব করলে গতকালের আগে বড় পতন হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ শে জানুয়ারি। সেদিন ডিজিইএন প্রায় ৩০৪ বা ৬.৭৭ শতাংশ পড়েছিল।

(4)বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা ভাইরাস নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। যার ফলে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে রোববার লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স কমে ৯৭ পয়েন্ট। এদিন বিকালে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার খবর আসে। আর এর প্রভাবে গতকালও বিশাল ধস নামে ডিএসইতে। ডিএসই সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, মূলত করোনাভাইরাসের প্রভাবে শেয়ারবাজারে এই পতন। আতঙ্কিত হয়ে মানুষ শেয়ার বিক্রি করেছে। তবে এটা সাময়িক প্রভাব। কেটে যাবে। এ অবস্থা থাকবে না। এদিকে মতিঝিলের বিভিন্ন ব্রোকার হাউজগুলো ঘুরে দেখা গেছে সবার মধ্যে চাপা একটি ভয় কাজ করছে। যার প্রভাব পরেছে পুঁজি বাজারের উপর।

বিনিয়োগকারীরা বলেন, দুই সপ্তাহ ধরেই সূচক কমছে। উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখছি না। বাজারে কোনো স্থিতিশীলতা নেই। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে। বাজারে বিক্রির চাপ অনেক। ক্রেতা নেই। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরাও বুঝছেন না কী করবেন।

বিনিয়োগকারী আতিকুল ইসলাম জানান, ২০১৫ সালে অবসরের পর ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা শুরু করেন তিনি। এখন তার শেয়ারের দর কমে কমে ঠেকেছে ৭ লাখে। গতকাল ৭ লাখে সব শেয়ার বিক্রি করেছেন তিনি। এ পরিস্থিতি কাউকে বোঝানোর অবস্থাও নেই তার।

আরেক বিনিয়োগকারী মতিন বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। দর যত কমছে, বিক্রির চাপ বেড়েছে। দাম কমতে থাকলেই বিক্রি করে দেয়।
জানা গেছে, জানুয়ারিতে বড় ধসের পর পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে গত ১০ই ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় ব্যাংকগুলোকে ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের সুযোগ দেয়ার পর থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। টানা কয়েক দিন লেনদেনের পাশাপাশি সূচক বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাও ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু ২৪শে ফেব্রুয়ারি থেকে বাজারে ফের লেনদেন ও সূচক কমতে শুরু করে। এর পর গতকাল আরো বড় ধস দেখা গেল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে দর কমেছে প্রায় সব শেয়ারেরই। হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র দুটির দর বেড়েছে। অপরিবর্তিত আছে একটির দর। লেনদেন হয়েছে মাত্র ৪৯৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার।

(5)ডিসইতে যে দুটি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে, সেগুলো হলো- এপিএসসিএল নন কনভারটেবল অ্যান্ড ফুললি রিডেমেবল কুপন বিয়ারিং বন্ড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৫৮ পয়েন্ট। হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর কমেছে ২৪৯টির, বেড়েছে ৩টির, অপরিবর্তিত আছে ৪টির দর। এ সময় পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে ৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার। এদিকে করোনা আতঙ্কে ১০ বছরে রেকর্ড পতন হয়েছে ভারতের শেয়ারবাজারে। গতকাল লেনদেন চালুর সঙ্গে সঙ্গে পতন শুরু হয় শেয়ারবাজারে। একদিনে এতটা পতন এর আগে কখনই ভারতীয় বাজারে হয়নি। দুপুরে প্রায় ২,৩০০ অঙ্ক পড়ে সেনসেক্স ৩৫ হাজারের ঘরে চলে আসে। সূচক নিফটি প্রায় ৫৫০ অঙ্ক পড়ে দাঁড়ায় ১০,৪০০-এর আশেপাশে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত পড়ে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়