শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৯ মার্চ, ২০২০, ০৬:১৯ সকাল
আপডেট : ০৯ মার্চ, ২০২০, ০৬:১৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নারী কি তাহলে পরাজিত হয়েই জন্ম নেয়?

শাওন মাহমুদ: সফল নারীদের যখন ‘অপরাজিতা’ নামে উপাধী দেয়া হয় তখন শুনতে ভালো লাগে, তবে মানতে নয়। মনে প্রশ্ন জাগে, নারীরা কি তাহলে পরাজিত হয়েই জন্ম নেয়? তাই শুধু তার জীবন পথযাত্রায় সফলতা আসলেই সে ‘অপরাজিতা’ উপাধী পাবে? এ কেমন কথা। যদিও আজ বিশ্বব্যাপী ‘নারী দিবস’ পালণ করা হবে, তারপরও আমি আজকে অপরাজিতা ফুল নিয়েই কথা বলবো। বিশেষভাবে নারীকে নিয়ে নয়।

আমার ছাদবাগানে দুই রঙের অপরাজিতা ফুলের গাছ আছে। নীল এবং সাদা। নীল অপরাজিতা গাছ খুব সহজেই বেঁচে থাকে। স্বাবলম্বী নয় বলে কাঁধ খুঁজে নেয় নিজে নিজেই। সঠিক মাত্রায় যত পেলে প্রতিটি লতাই ফুল ফোঁটাতে থাকে সারা বছর। যদিও মাঝে মধ্যে লতাগুলোকে ছেঁটে দিলে ঝাঁড়ের বারন্ত ভাবটা বেশি আসে। একজনার বাগান থেকে একটা নীল অপরাজিতা ফল এনেছিলাম। অনেকটা শীমের মতন দেখতে। শুকনো হলে তবেই চারা করা যায়। সাধারণ একটা টবে ছিটিয়ে দিয়েছিলাম, সে ফলের ভেতরে থাকা তিনটি বীজ। মাথা উঁঠিয়ে আমার পানে তাঁকাতে সময় নেয়নি তারা।

একজনকে বাসস্থান করে দিয়েছিলাম একটা পুরোনো টায়ারে। ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম ছাদের দুটো পাইপের মাঝে। দিব্বি জীবনযাপন করছে সে গত কয়েক বছর ধরে। হাত পা ছড়িয়ে, আনন্দে। বাড়তি চাহিদা কখনই নেই তার। আর বাদ বাকি দুটো চারাকে একটা বালতিতে বাসস্থান করে দিয়েছিলাম। ছাদের দেয়াল ঘেষে। এরপর আর নীল অপরাজিতা ফুলের অভাব হয়নি ছাদবাগানে। বর্ষা বা শরতে বেশী ফুল ফুঁটতে দেখি। আর সময়গুলোতে ঝিঁমিয়ে ফুল দেয় তারা। কিন্তু থেমে থাকে না। চাষী হলেও এক সময় জানতামই না যে, নীল ছাড়াও অপরাজিতার আরও অনেক রঙ আছে।

অপরাজিতা কখনও পরাজিত হয়ে জন্ম নেয় না। খুব সহজে মিলেমিশে থাকে সবার মাঝে। চারা তৈরির জন্য বিশেষ যতœও নিতে হয় না। প্রতিদিন জল আর মাঝে মাঝে শুকনো ডাল ছেটে দিলেই হলো। বাড়তে থাকে তারা মাথা উঁচু করে। তবে চারা অপরাজিতার কাঁধ লাগে, খানিকটা সময়ের জন্য। তারপর নিজের মতন করে নিজেকে গুছিয়ে নেয়। ছড়িয়ে যায় চারিদিকে। সহজে হাল ছাড়ে না এই গাছ। একদম মৃতপ্রায় গাছেরাও জল নিয়মিত পেলে সবুজ পাতায় ফুল ফোঁটায়। শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা যেকোনো ঋতুতে, তারা তাদের মতন করে ফুল ফুঁটিয়ে থাকে। কখনো কম, কখনো বেশি।

যেকোনো রঙেরই হোক না কেন, অপরাজিতা ফুলের জীবনযাপন, স্বভাব, বেড়ে ওঠা বা বেঁচে থাকাসহ সব মিলিয়ে যদি নারীকে তুলনা করে অপরাজিতা বলা হয়, তাহলেই আমি শুধু নারীর জন্য ‘অপরাজিতা’ উপাধীটা মেনে নিবো। নয়তো চাষীর কাছে অপরাজিতা শুধু ফুল হয়েই থাকবে সারাজীবন। আমার কথা বিশ্বাস না হলে একবার নিজেই চেষ্টা করে দেখুন। ভালোবেসে একটা অপরাজিতা চারা দত্তক নিয়ে নিন। ছাদবাগানে বা বারান্দার গ্রীলে সবুজ পাতার ফাঁকে নীল বা সাদা অপরাজিতা ফুল আপনাকে কখনও ছেড়ে যাবে না। চাষী পরিবার, সুখী পরিবার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়