শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ০৯ মার্চ, ২০২০, ০৬:১৪ সকাল
আপডেট : ০৯ মার্চ, ২০২০, ০৬:১৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমি একজন যোদ্ধা, আমার মতো কোটি কোটি যোদ্ধা এই দেশে আছেন

 

মুনমুন শারমিন শামস: ২২ বছর বয়সে আমি যখন প্রথম চাকরি করতে যাই, তখন নারী দিবস কী জিনিস আমি জানতাম না। শুধু জানতাম আমার বাপ রিটায়ার্ড। আমাকে এখনো টেনে নিয়ে যেতে তার বেজায় কষ্ট হচ্ছে। আমি চাচ্ছিলাম যতো তাড়াতাড়ি পারি বাপের কাঁধ থেকে নেমে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। তো ২০০৪ সালে আমি যখন চাকরি নিলাম, আমার বেতন সাড়ে চার হাজার টাকা। যা দিতে চেয়েছে, এক কথায় রাজি হয়েছে। মুলামুলি শিখিনি তখনো। পদের নাম মিডিয়া এক্সিকিউটিভ। তো সেই অফিসের বুড়া দামড়া বস প্রথমদিন থেকেই আমার লগে ফ্লার্ট করা শুরু করলেন। কয়দিন পর দেখলাম সেই অফিস হলো ফ্লার্টের কারখানা। সবাই খালি ফ্লার্টই করে। ফ্লার্ট না করলে তাকে নানাভাবে যন্ত্রণা দেওয়ার চলও আছে। তো বুড়ার ফ্লার্ট আমার পোষায়নি। আমি তিন মাস কাজ করে চাকরি ছেড়ে দিলাম। তখনো কোনোদিন নারী দিবসের কথা শুনিনি। এরপর চাকরি নিলাম বড় পত্রিকায়। ভালো পরিবেশ। কাজ করি। কাজ শিখি। আওয়ামী লীগ বিট করেন এক বড় ভাই, তার সঙ্গে আমিও আ’লীগ বিটে কাজ করি। তো একদিন সাদা ফুলহাতা শার্ট আর জিন্স পরে আ’লীগ অফিসে গেলাম অ্যাসাইনমেন্টে। ফিরে আসার পর বড় ভাই মুখ হাঁড়ি করে জানালেন, আমি জিন্স আর শার্ট পরে বিরাট বড় অপরাধ করেছি। এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে তিনি আমার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিলেন।

এই ঘটনায় আমার পিত্তি জ্বরে গেলো ঠিকই। কিন্তু তার কথা বন্ধ করায় আমার কিছুই যায় আসলো না। বরং লাভই হলো। তিনি আমাকে কোনো স্পেশাল স্টোরি করতে দিতেন না এক রহস্যময় কারণে। এবার আমি মনের আনন্দে একের পর এক স্পেশাল করে সরাসরি চিফ রিপোর্টারকে দিতে লাগলাম। এর কতোগুলো লিডও হলো। বড় ভাইয়ের মুখ আরও প্যাঁচার মতো হয়ে ঝুলে পড়লো নিচে। আমি তখনো নারী দিবসের নাম শুনিনি। এরপর এক মৌলবাদী হলেন চিফ রিপোর্টার। তিনি আমার রাজনৈতিক বিট করা নিয়ে বিরাট ঝামেলা পাকাতে লাগলেন। সেই ঝামেলা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাম করেছি। রাত্রি সাড়ে এগারোটা-বারোটায় একা অফিসে ফিরেছি রিকশায়, বেগুনবাড়ির মতো জায়গায়। কারফিউয়ের দিনে রাত ১১টা পর্যন্ত সুধা সদনে থেকে অফিসে এসেছি এর-তার মোটরসাইকেলে, অন্ধকার নির্জন পথ একা পাড়ি দিয়েছি। তবু কোনোদিন অফিসে বলিনি, এই অ্যাসাইনমেন্ট আমি পারবো না। আমাকে দেবেন না। তখনো জানি না নারী দিবস কী। লিখতে লিখতে পুরো রাত পার হবে। তবু ঘটনার কোনো শেষ নেই। আমি একজন যোদ্ধা। আমার মতো কোটি কোটি যোদ্ধা এই দেশে আছেন। তাদের সবার কালকে পরার মতো বেগনি শাড়ি নেই। কিন্তু যুদ্ধটা আছে। এই যুদ্ধটাই নারীবাদ। যুদ্ধের জন্য উৎসর্গকৃত প্রতিটা দিবসই নারী দিবস। সবাইকে ভালোবাসা। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়