শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৮ মার্চ, ২০২০, ০৯:৩১ সকাল
আপডেট : ০৮ মার্চ, ২০২০, ০৯:৩১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৭ মার্চের ভাষণ; ‘কল-রেডী’ মাইকের দোকানের অবদান কেউ জানেন?

ডেস্ক রিপোর্ট : কল-রেডীর দোকানটা খুঁজে পেতে খুব ঝামেলা হবে না। ঢাকার গুলিস্তানে রিকশাচালককে লক্ষ্মীবাজারের হৃষিকেশ দাশ রোড বললেই নিয়ে যাবে দোকানটায়। মাইকের দোকান বলে এখনো অনেকে চেনে। কিন্তু এই মাইকের দোকানের সঙ্গেও মিশে আছে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

কল-রেডী, সাধারণ এক মাইকের দোকান হলেও অসাধারণ তার অর্জন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করে কল-রেডীও ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। বর্তমানে দোকানটির মালিকানায় আছেন সাগর ঘোষ। তার বাবা- কাকারা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু-বুলেট উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর টানে রাতের আঁধারে রেসকোর্স ময়দানে মাইক লাগিয়েছিলেন। ৭ মার্চ সকালেও মাইক লাগানো হয়। কিন্তু সেই কাজের কোনও স্বীকৃতি তার বাবা-কাকারা পাননি। তিনি ও তার পরিবার খুব আশা করেছিলেন, বাবা-কাকাদের যে কেউ জীবিত থাকতেই স্বীকৃতি পাবেন। কিন্তু তা হয়নি। সাগর ঘোষের বাবা-কাকাদের মধ্যে সর্বশেষ সদস্য কানাই ঘোষও তিন বছর আগে মারা গেছেন।

কল-রেডীর আদি মালিকদের মধ্যে একজন সাগরের কাকা কানাই ঘোষ। ১৯৭১ সালে কানাই ঘোষের বয়স ছিল ১৭-১৮ বছর। ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার হয়েছিল কানাই ঘোষ আর তার দুই ভাইয়ের লাগানো মাইকে। সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আশেপাশে থাকার পরও জনসভার আগের দিন ৬ মার্চ কানাই ঘোষ তার অন্য দুই ভাইকে নিয়ে রেসকোর্স ময়দানে মাইক লাগাতে যান। ৭ মার্চ অনেক ঝুঁকি সত্ত্বেও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে মাইক লাগিয়েছেন তিনি। সেদিন ৭০টারও বেশি মাইক লাগানোর কথা জানা যায়। বঙ্গবন্ধু যখন ভাষণ শুরু করেন তখন তারা সবাই কাছাকাছিই ছিলেন।

রেসকোর্স ময়দানে ব্যবহার হওয়া মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ডটি তারা সংরক্ষণ করেছেন। যেসব অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ৭টি এখনও আছে। মাইক্রোফোনের মধ্যে আছে চারটি। দীর্ঘদিন ধরে তারা এসব সংরক্ষণ করে রেখেছেন। সাগর ঘোষ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, একটা সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা না গেলে এগুলোও হয়তো এক সময় নষ্ট হয়ে যাবে। তার ভাষ্য, এসব স্মৃতিচিহ্নের কোনও কিছুই আর কল-রেডীর অফিসে (৩৬ হৃষিকেশ দাশ রোড) সংরক্ষণ করা নেই। যত্নের অভাব হতে পারে বলে সেগুলো অন্যস্থানে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু যে টেবিলটি (পোডিয়াম) সামনে দাঁড়িয়ে, তার ওপর চশমা রেখে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটি এখনও আছে। রাজধানীর হোসেনি দালান এলাকার হাজী চান মিয়া ডেকোরেটর সেদিন ওই টেবিল সরবরাহ করেছিল। টেবিলটি তাদের কাছে এখনো আছে।

১৯৪৮ সালে কল-রেডী যাত্রা শুরু করে। প্রথমে নাম ছিল আরজা (আরজেএ) ইলেক্ট্রনিকস। পরে নাম বদলে রাখা হয় কল-রেডী অ্যাট সার্ভিস (আই অ্যাম অলওয়েজ রেডি অন কল অ্যাট ইওর সার্ভিস)। এর প্রতিষ্ঠাতা পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের ব্যবসায়ী প্রয়াত দয়াল ঘোষ। দয়াল ঘোষরা ছিলেন ছয় ভাই। এই ছয় ভাইয়েরই এক ভাই হরিপদ ঘোষ। হরিপদ ঘোষের চার ছেলের মধ্যে সবার বড় বিশ্বনাথ ঘোষ এখন কল-রেডীর চেয়ারম্যান। আর তৃতীয় ছেলে সাগর ঘোষ পরিচালক হিসেবে কল-রেডীর দেখভাল করছেন।

সূত্র- বাংলা ইনসাইডার

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়