ডেস্ক রিপোর্ট : [২] নভেল করোনাভাইরাস ডিজিজ বা কভিড-১৯-এ বিশ্বব্যাপী সংক্রমিতের সংখ্যা ৯৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছে ৩ হাজার ৩০০-এর বেশি মানুষ। বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। বাণিজ্য, অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আক্রান্ত অনেক দেশই শিল্প-কারখানার উত্পাদন কার্যক্রম সীমিত করে এনেছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। ফলে সংক্রমিত অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের এখন সময় কাটছে বাড়িতেই। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বলছে, ভাইরাসটির প্রভাবে বিশ্বের ৩০ কোটির মতো শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। খবর এএফপি, বণিক বার্তা
[৩] জাতিসংঘের শিক্ষাবিষয়ক সংস্থাটি বলছে, নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আক্রান্ত দেশগুলো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৩টি দেশে পুরোপুরি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। আর নয়টি দেশে স্থানীয় পর্যায়ে স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ২৯ কোটি ৫ লাখ শিশুর ওপর এর প্রভাব পড়েছে।
[৪] কভিড-১৯ মোকাবেলায় সর্বশেষ স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতালি। ইউরোপের দেশটিতে গতকাল পর্যন্ত সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৯। মারা গেছে ১০৭ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত বুধবার থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
[৫] চীনের বাইরে সংক্রমিত দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকা দক্ষিণ কোরিয়াও ২৩ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। দেশটিতে গতকাল পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে ৬ হাজার ৮৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের।
[৬] এছাড়া জাপানের প্রায় সব স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আগামী এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুল বন্ধ রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানও। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় তিন হাজারে চলে এসেছে। আর ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে ১০৭ জন।
[৭] এর বাইরে অস্থায়ী ভিত্তিতে সংক্রমিত অনেক দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে। ভাইরাসটির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের স্কুলের বাইরে থাকার যে স্রোত বাড়ছে, এটি নজিরবিহীন উল্লেখ করে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অদ্রে আজুলে বলেন, এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে শিক্ষার অধিকার হুমকির মধ্যে পড়তে পারে।
[৮] গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে সর্বপ্রথম নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর পর থেকে শহরটিতে ভাইরাসটি মহামারী আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় নাগরিকদের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেয় চীন সরকার। এতে গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা কমে আসছে। দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৪০৯, মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১২ জনের। এর মধ্যে গতকাল সংক্রমিত হয়েছে ১৩৯ জন, আর মারা গেছে ৩১ জন, যার অধিকাংশ উহানের বাসিন্দা।
আপনার মতামত লিখুন :