ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:[২] ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী মাথালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলন কুমার ভৌমিককের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এক ছাত্রীর বাবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি জানাজানি হয়। স্থানীয় গ্রামবাসী গেল রোববার (০১ মার্চ) ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
[৪] মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি সরকার জানান, অভিযোগ পেয়ে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পাবনা জেলা কর্মকর্তার কাছ সুপারিশ করা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মুনছুর রহমান সোমবার (২ মার্চ) ওই শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
[৫] গ্রামবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভাড়ইমারী মাথালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি শ্রেণীকক্ষে কোনো শিক্ষক না থাকায় পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদের শ্লীলতাহানি করে। তাৎক্ষণিক ওই শিশু শিক্ষার্থীরা কান্না শুরু করে। পরে শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের হয়ে বিষয়টি সহপাঠীদের জানিয়ে দেয়। খবরটি জানাজানি হলে অভিভাবকসহ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে উত্তেজিত হয়ে অপরাধী শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে। সেদিন সুকৌশলে পালিয়ে যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। পরে অভিভাবকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
[৬] পঞ্চম শ্রেণির চারজন ছাত্রী জানায়, ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে তাঁর অফিস কক্ষে নিয়ে গিয়ে তাদের অশ্লীল ভিডিও দেখায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। অশ্লীল কথা বলে। বিষয়টি কাউকে জানালে পরীক্ষায় ফেল করানো হবে এমন ভয় দেখানো হয়।
একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে বিদ্যালয়ে যেতে চাইত না, কান্না করত। কেন যেতে চায় না জানতে চাইলে সে আমাদের কাছে সব ঘটনা খুলে বলে। তখন বিষয়টি লিখিতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে জানাই।’
ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আইনুল হক বলেন, তিনি শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন নিপীড়ন করতে ভালোবাসেন এবং তা করেনও। বিবেকবর্জিত এ শিক্ষকের কারণে মেয়েদের শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। অনেক মেয়ের পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তার শাস্তি ও বদলি দাবি করে শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। উত্তর পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি সরকার বলেন, ‘এক ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলি। দুই জন ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।’
ওই শিক্ষক বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এলাকার কিছু মানুষ আমাকে বিদ্যালয় থেকে তাড়ানোর জন্য ছাত্রীদের দিয়ে অভিযোগ করিয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :