ওবায়দুর রহমান, ঢাবি প্রতিনিধি: [২] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সংস্কৃতি সম্পাদক এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সাহিত্য সম্পাদক আসিফ তালুকদারের বিরুদ্ধে যুবলীগের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি রাজধানীর ৪নং ইউনিট যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী রানা। এ সময় আসিফ মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। শুক্রবার রাতে হাতিরপুল কাঁচাবাজারের সামনে এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
[৩] প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাতিরপুল কাঁচাবাজারের বিপরীত পাশে বলাকা ডেকোরেটরের সামনে দাঁড়িয়ে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন রানাসহ আরও তিনজন। তাদের মধ্যে একজন ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস আলমের ছেলে সুজন। এ সময় তাদের মধ্যে উচ্চ বাক্য বিনিময় হয়। তাদের পাশেই তিন-চারজনের বেষ্টনীর মধ্যে ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা আসিফ তালুকদার। রানাসহ বাকিরা উচ্চস্বরে কথা বলায় আসিফ তাদেরকে কথা বলা বন্ধ করতে বলে। তারা কথা বলা বন্ধ না করলে হঠাৎ করেই আসিফ গিয়ে রানার কলার ধরে টানতে টানতে সামনে নিয়ে যায়।
[৪] নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন জানান, আসিফ রানাকে কলার ধরে টানাটানি শুরু করলে রানার সঙ্গে থাকা দুজন আসিফের পরিচয় জানতে চায়। তখন আসিফ বলে, একটু অপেক্ষা কর! পা থেকে মাথা পর্যন্ত পরিচয় দিব তোদের কাছে। এরপর একজন আসিফের পরিচয় দেয় যে, তিনি ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক। রানার সঙ্গীরা তখন আসিফের সঙ্গীদের জানায় যে, তারা ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানীর পরিচিত। কিন্তু গোলাম রাব্বানীর নাম নিতেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে গালাগাল শুরু করে আসিফ। তখন রানার সঙ্গীরা জানায়, তারা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নুর তাপসের রাজনৈতিক কর্মী, যুবলীগ করে। তখন আসিফ বলে, তাপস কে, তাপসকে চিনি না! এরপর আসিফ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ছেলে সুজনকে ধাক্কা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আরও কয়েকজনকে নিয়ে এসে রানাকে মারধর করে। শুধু রানা নয়, হাতিরপুল কাঁচা বাজারের একজন মাছ বিক্রেতা, ঘটনাস্থলের পাশ্ববর্তী দোকানদারসহ অন্তত ৬জন পথচারী এসময় আসিফের সহযোগীদের হাতে মারধরের শিকার হয়।
[৫] এসময় ভুক্তভোগিরা ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
[৬] এই বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আসিফ তালুকদার বলেন, আপনাদের কাছে ইনফরমেশনগুলো ভুলভাবে এসেছে। বন্ধুদের নিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম সেখান দিয়ে। হঠাৎ করে তার সাথে একটু কথা-কাটাকাটি হয়। আমি সেই বিষয়টাই সমাধান করতে গিয়েছিলাম।
[৭] তিনি মদ্যপ থাকার বিষয়ে বলেন, এটা কনোভাবেই সম্ভব না। এভাবে বলে আমাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে যে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল আমরা উভয়ই বসে ঘটনাটি মিউচুয়াল করে নিয়েছি।
[৮] এই ঘটনাকে ডাকসুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেন। দ্বায়িত্বশীল জায়গা থেকে তার আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল।
[৯] এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :