কামরুল হাসান মামুন : উবমবহবৎধঃরাব ফরংবধংব বা অবক্ষয়জনিত রোগের কথা নিশ্চই শুনেছেন। এই রোগ হলে সময়ের সাথে শরীর কেবল খারাপ হতেই থাকবে। এই রোগ হলে কখনো ভালোর দিকে যায় না। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সকল কিছুই যেন ডিজেনেরেটিভ রোগে আক্রান্ত। শুরু হয় ভালোই তারপর যতোদিন যায় কেবল খারাপ হতেই থাকে। যেমন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাই ধরা যাক। এর শুরুটা কি গ্লোরিয়াস ছিলো ভাবা যায়? কি মাপের শিক্ষক ছিলো মাম্মা মিয়া! শুধুই কি পড়াশোনা আর গবেষণায়? সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও ছিলো অগ্রণী ভূমিকা। ছাত্র-শিক্ষকের নেতৃত্বেই ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা। ৯০ এর গণঅভ্যূত্থানকে অর্জন বলব কিনা সেই নিয়ে আমি সন্দিহান কারণ সেই গণঅথানের মাধ্যমে আমরা এক স্বৈরাচারীর পরিবর্তে এমন কোনো ব্যবস্থা আনতে পারিনি যা সেই গণঅভ্যূথানের আগের সরকারের চেয়ে বেটার। বরং আমরা আরো শক্তিশালী পিরিয়ডিক স্বৈরাচারী ব্যবস্থার মধ্যে গিয়ে প্রায় চিরস্থায়ী স্বৈরাচারী ব্যবস্থার মধ্যে ঢুকে পরেছি।
আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক উভয়ের মান খুব দ্রুত নি¤œগামী হচ্ছে। এরা এখন আর ভালো-মন্দের ফারাক বুঝতে অক্ষম। যেমন ভালো শিক্ষক আর খারাপ শিক্ষক, ভালো বই আর খারাপ বইয়ের পার্থক্য জানে না। আমরা এখন আর সত্য মিথ্যার ফারাক, সৎ-অসৎ এর ফারাক বুঝতে পারি না। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালেও অনেক কিছু বোঝা যায়। এর শুরুও ছিলো গ্লোরিয়াস। আজ আর আগের মতো নেই। আমাদের বিমানের শুরুও ছিলো গ্লোরিয়াস। এক সময় পাটকলগুলোর শুরুও ছিলো গ্লোরিয়াস। আমাদের ফুটবলেরও একটি গ্লোরিয়াস ইতিহাস ছিলো। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে জেলা স্কুল ছিলো। তাদের মানও বেশ ভালো ছিলো। এক সময় ঢাকা কলেজ, আনন্দমোহন কলেজ, বিএল কলেজ, বিএম কলেজ ইত্যাদি কলেজগুলোতে খুবই ভালো পড়াশুনা হতো। এরাই ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ছাত্রের যোগানদাতা। আজ তাদের সেই অবস্থান নেই। এক সময় আমাদের এফডিসি ও সিনেমাও খুব ভালো অবস্থানে ছিলো। এক সময় এই বাংলার মানুষ বেশ সৎ ছিলো। এখানে আদর্শভিত্তিক রাজনীতি ছিলো। সেটাও নেই। এইভাবে যেই দিকেই তাকাই সেইদিকেই অধপতনের আওয়াজ পাই। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :