সুজন কৈরী : [২] জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করে থাকে। এ ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা পশ্চিম কর্তৃক কমিশনারেটের সম্মেলন কক্ষে উক্ত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
[৩] এ বছর মেলায় সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর প্রদানকারী ১০ টি প্রতিষ্ঠানকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে এনবিআরের সম্মানিত সদস্য (ভ্যাট নীতি) জনাব মো. মাসুদ সাদিক উপস্থিত থেকে সম্মাননা প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন।
[৪] প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ওয়ালটন হাই টেক ইন্ডা. লি. এর পরিচালক জনাব এস, এম রেজাউল আলম ও সারা লাইফ স্টাইল লি. নামীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জনাব মো. মতিউর রহমান বক্তব্য প্রদান করেন।
[৫] উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা পশ্চিমের কমিশনার জনাব ড. মইনুল খান।
[৬] এ বছরের সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী হিসেবে মনোনিত প্রতিষ্ঠান সমূহ হল: (১) ওয়ালটন হাই টেক ইন্ডা. লি., প্লট-১০৮৮, রোড, সাবরিনা সোবহান ৫ম এভিনিউ, বসুন্ধরা, ভাটার, ঢাকা (৩৭ লক্ষ ৬৫ হাজার) (২) এসকোয়ার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, এসকোয়ার টাওয়ার (১০ম তলা), ২১ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ স্মরনী, তেজগাঁও, ঢাকা- ১২০৮ (৩৪ লক্ষ ৭৭ হাজার) (৩) সারা লাইফ স্টাইল লি., প্লট ১০ মেইন রোড-০১, ব্লক-ক, সেকশন-০৬, মিরপুর, ঢাকা (৩২ লক্ষ ০৫ হাজার) (৪) র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিঃ, সোনারতরী টাওয়ার, ১২ সোনারগাঁও রোড, ঢাকা-১০০০ (৩২ লক্ষ ০৫ হাজার) (৫) হাতিল কমপ্লেক্স লিঃ, ৮ শেওড়াপাড়া, রোকয়ো স্মরনী, মিরপুর, ঢাকা-১২১৫ ( ২১ লক্ষ ৩৭ হাজার) (৬) মাল্টি লাইন ইন্ডাঃ লিঃ, প্রাণ আরএফএল সেন্টার, গ-১০৫/১ মধ্য বাড্ডা, প্রগতি সরনী, বাড্ডা, (১৯ লক্ষ ৫০ হাজার) (৭) ফিট এলিগেন্স লিঃ, ১৮৬, তেজগাঁও, শি/এ, ঢাকা-১২০৮, (১৮ লক্ষ ২৪ হাজার) (৮) নাভানা ফার্নিচার লিঃ, ১৬/বি রোড নং- ৯৩, গুলশান-২, ঢাকা-১২১২ (১৬ লক্ষ ৫৫ হাজার) (৯) মেসার্স ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, খাজা প্যালেস বাড়ী: ৭৬/বি রোড-১১, বনানী, ঢাকা-১২১৩ (১৬ লক্ষ ০১ হাজার) (১০) বংগ বেকারস লিঃ, গ-১০৫/১, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২ (১৫ লক্ষ ৩০ হাজার)।
[৭] এ বছর দেশি ও বিদেশি ৪৮৭ টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণ করে। ৫% হারে এই মেলা থেকে মোট ৬.৪৭ কোটি টাকা ভ্যাট আহরিত হয়।
[৮] প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন জনগণের দেয়া ভ্যাট আহরণে এই দশটি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মেলায় আইন পরিপালনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।এই সংস্কৃতি অন্যান্য স্থানেও ছড়িয়ে দিতে হবে। এজন্য ব্যবসায়িদের তিনি এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।ভ্যাট আহরণে তিনি ডিজিটালকরণের উপর দোর দেন।
[৯] ওয়াল্টনের প্রতিনিধি বলেন এবারের মেলায় দর্শনার্থী ও স্টলের পরিমাণ কম ছিল। সাপ্তাহিক ছুটিসহ মোট ৬দিন মেলা ব্যাহত হয়। তা সত্ত্বেও তারা যথাযথ ভ্যাট প্রদানে এগিয়ে এসেছেন।তারা নির্বিঘ্নে ভ্যাট দিতে চান এবংএজন্য সরকারের সকল সেবার মান বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। শুধু এনবিআর বদলালে হবে না ইপিবি, ট্রেড লাইসেন্স দপ্তরসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
[১০] সারাহ প্রতিনিধি বলেন তারা নতুন ভ্যাট আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন আইন মানলে চূড়ান্ত ব্যবসায়িক খরচ কমে যায়। তারা ঢাকা পশ্চিম কমিশনারেটের নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণকে স্বাগত জানান।
[১১] সভাপতির বক্তব্যে ড. মইনুল খান বলেন বাণিজ্য মেলায় আহরিত মোট রাজস্বের পরিমাণ কম হলেও তা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। এই ভ্যাট সাধারণ জনগণ সরাসরি দিয়েছে এবং তা তারা জানতে চান এই ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে কিনা।বাণিজ্য মেলায় এই দশটি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ অটোমেশন পদ্ধতিতে ভ্যাটের হিসাব সংরক্ষণ করেছে এবং সঠিক পরিমাণ ভ্যাট পরিশোধ করেছে। তিনি বলেন এনিআরের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাক্ষর করা এই সম্মাননা তাদের ভ্যাট আইন মানার স্বীকৃতি।অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও স্বেচ্ছায় আইন মেনে ভ্যাট প্রদান করার জন্য আহবান জানান।তিনি এনবিআরের ডিজিটাল ব্যবস্থার সুযোগ নেয়ার জন্যও সকলকে অনুরোধ করেন। সবশেষে সকলকে ধন্যবাদ দানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :