নুরুল আলম, মিরসরাই প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ের আলোচিত নাহিদা আক্তার সুমি হত্যাকান্ড নিয়ে মূল ঘটনাকে আড়াল করে তড়িগড়ি করে মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশ সুমির পরিবার। মেয়ে হারানোর শোকে মা পারভীন আক্তার পপি এবং বাবা নুরুল আফসার।
জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া গ্রামের সুনুু মিয়া সওদাগর বাড়ীর প্রবাসী নুরুল আফসারের কন্যা নাহিদা আক্তার সুমিকে হত্যা করে স্বামী মীর হোসেন প্রকাশ ফারুকসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার মিরসরাই প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদা আক্তার সুমির মা পারভীন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের চিনকীরহাট এলাকার আক্তার মিয়ার ছেলে মীর হোসেন প্রকাশ ফারুক কোম্পানীর সাথে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে ৫ পদের ফার্নিচার দিই। বিয়ের পর কিছু দিন তাদের সংসার সুখে কাটলেও বিগত চার বছর যাবৎ আরো যৌতুকের দাবিতে স্বামী মীর হোসেন ফারুক ও তার বাবা মা আমার মেয়েকে শারিরীক অত্যাচার নির্যাতন করতো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় তার স্বামীকে আমি প্রায় ৬ লাখ টাকা দিয়েছি। টাকা দেয়ার পর কিছুদিন ভালো থাকলেও পরে আবার তারা নির্যাতন করতো।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টার সময় স্বামী মীর হোসেন ফারুক আমাকে ফোন দিয়ে বলে; তোমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে তার লাশ নিয়ে যাও।
খবর পেয়ে দুপুর ২টায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ময়নাতদনেন্তর জন্য লাশ নিয়ে যায়। একই দিন রাত ৮টার সময় লাশের ময়নাতদন্ত ও জিডি করার কথা বলে ওসি (তদন্ত) মো. মাকসুদ আলম আমার থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নাদিয়া আক্তার সুমির বাবা মোঃ নুরুল আফসার, ফুফা মোঃ মুসা মিয়া, খালা আছমা পারভীন আক্তার, খালু আবুল হাশেম মেম্বার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রায়হান উদ্দিন বলেন, মামলার এজাহারের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে শুধু মামলাটি তদন্ত করতে দেয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে।
জোরারগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাকসুদ আলম বলেন, মামলার বাদীকে সহায়তা করার জন্য থানায় এজাহার লেখা হয়েছিলো। তাতে বাদীর বক্তব্যের বাইরে কোন কিছু লেখা হয় নাই।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি মো. মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বাদীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি হত্যাকাণ্ড ভিন্নখাতে প্রভাহিত করার মত অমানবিক কাজ পুলিশ করতে পারেনা। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :