শিরোনাম
◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত

প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:৫০ দুপুর
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:৫০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেকারদের নিয়ে তামাশা ও একটি ফেসবুকীয় গল্প

আক্তারুজ্জামান : গত বছরের জুনে খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১,১৬৬ পদের বিপরীতে আবেদন পড়েছিলো ১৩,৭৮,০০০টি। অর্থাৎ প্রতি পদের জন্য ১,১৮২ জন আবেদন করে। এতে সহজেই অনুমেয় দেশের বেকারত্ব কতটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ওই পদের পরীক্ষাটা আজও অনুষ্ঠিত হয়নি। তার চেয়েও মারাত্মক তথ্যটি এবার জেনে নিন....

ওই পদের আবেদন ফি ছিলো ১১২ টাকা। ক্যালকুলেশন বলছে আবেদন ফিয়ের মাধ্যমে খাদ্য অধিদপ্তর পেয়েছে ১৩,৭৮,০০০৯x১১২= ১৫,৪৩,৩৬০০০ (১৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা)।

এ তো গেল শুধু এক খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাব। আর বাকিগুলো? প্রাইমারি, শিক্ষক নিবন্ধন, বিসিএসসহ প্রতি বছর পর্যাপ্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হচ্ছে। বেকাররা হুড়মুড়িয়ে তাতে আবেদন করে। যা থেকে সহজেই বোঝা যাচ্ছে দেশে বেকারদের কাছ থেকে টাকা লুটপাটের এক মহোৎসব চলছে।

বেকারদের নিয়ে যে তামাশা চলছে তাতে একটু মশলা যোগ করেছে ফেসবুকের একটি পোস্ট। সেখানে বিশ বছরের একটি হিসাব দেখিয়ে খুব সুন্দর পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে।

গল্পটি দেখে নিতে পারেন আপনিও ........
চিন্তা করছি একটা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিমু।

পদসংখ্যা থাকবে ৪৬ টা। বেতন জাতীয় বেতন স্কেলের ১১ তম গ্রেড অর্থাৎ বেসিক বেতন পাবে ১২৫০০ টাকা।

আবেদন ফি থাকবে ৫০০ টাকা আর আবেদন করবে ৪ লাখ বেকার গ্রাজুয়েট।

নিয়োগ থেকে আমার আয় হবে ৪,০০,০০০x৫০০ =২০,০০,০০,০০০ টাকা।

২০ কোটি টাকা আয় হয়ে গেল! ৪৬ জন নিয়োগও পেল।

(এর মধ্যে যদি দু'চার দশ বিশ জন আমাকে চাকরি পাওয়ার জন্য চার পাঁচ লাখ টাকা করে দেয়, তাহলেও মন্দ না। এখানেও আমার আয় হয় ৫ লাখx২০=১০০ লাখ বা ১ কোটি। যাইহোক, আমি সৎ মানুষ হিসেবে এই ১ কোটি টাকা মনে করেন নিলাম না)

এবার ৪৬ জনকে ১২৫০০ বেসিক হিসেবে অন্যান্য ভাতাসহ ১৬০০০ টাকা বেতন দিমু।

প্রতি মাসে আমার খরচ হবে ৪৬x১৬০০০=৭,৩৬,০০০ টাকা।

১২ মাস বা এক বছরে ৪৬ জনের বেতন দিতে আমার খরচ হবে ৭৩৬০০০x১২= ৮৮৩২০০০ টাকা।

১ বছরে আমার খরচ হবে ৮৮,৩২,০০০ টাকা।
অতএব, ২০বছরে খরচ হবে ২০x৮৮৩২০০০= ১৭,৬৬,৪০,০০০ টাকা।

অর্থাৎ ২০ বছর ৪৬ জনকে বেতন দিয়া চালালে আমার খরচ হবে মাত্র ১৭ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মাত্র।

এরপরেও নিয়োগ দেওয়ার সময় যে ২০ কোটি টাকা আয় করছিলাম, সেখান থেকে আরও বাকি থাকবে- ২০,০০,০০,০০০-১৭,৬৬,৪০,০০০= ২,৩৩,৬০,০০০ টাকা।

বাহ! এতো কিছুর পরেও আমার হাতে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা থেকে যাবে।

কি ভাবতেছেন? এদের বেতনের ইনক্রিমেন্ট হয় নাই কেন? ২০ বছরে বেতন বাড়েনি কেন?

হুনেন, এই যে ২০ বছর এদেরকে ফ্রি বেতন দিয়া চালাইলাম, হেইডা দেখলেন না?

লাহাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ!

বাঙ্গালির উপকার করলেও বুঝে না, সমালোচনা করে, হুহ্!!

আমি যে ৪৬ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান করলাম, এজন্য আমাকে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য পুরস্কার দেওয়া উচিত নয় কি?

গল্পটি পড়ার পর হাস্যরসাত্মক মনে হতে পারে। কিন্তু এটার বাস্তবতা আসলেই ভিন্ন। খাদ্য অধিদপ্তর তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা ফেলে রেখেছে আজ প্রায় নয় মাস। সে টাকা বাচ্চা-কাচ্চা কিছু দিয়েছে কিনা সেটা জানার চেষ্টা আমি করিনি। আবার এতোগুলো খালি পদ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কিভাবে চলছে সেটা জানারও ইচ্ছা হয়নি। কেননা আমি তো বেকার। আমাকে আবার নতুন করে কোনো একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার জন্য দৌঁড়াতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়