নিজস্ব প্রতিবেদক : লোক সংস্কৃতির কিংবদন্তিতুল্য গবেষক শামসুজ্জামান খানও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর শুধু একজন সাধারণ কর্মীই নন, রীতিমতো ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে তখনকার ঢাকা হল, এখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন। গবেষক শামসুজ্জামান খান, যিনি সবচেয়ে বেশি সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শিল্পকলা একাডেমি এবং জাতীয় জাদুঘরের। এখন জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান।
শামসুজ্জামান খান যুক্ত হয়েছিলেন বাকশাল প্রক্রিয়ার সঙ্গেও। বাকশালের চারজন সচিবের একজন সচিবের সচিব হিসেবে কাজ করেছেন। আর এই রাজনীতির সঙ্গে তার যুক্ততা আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির কারণে। শেখ মনি তার সহপাঠী এবং ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। আর শেখ মনিই তাকে বাংলা একাডেমির সাথে যুক্ত হতে বলেছিলেন।
স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজের ‘উপসংহার’ অনুষ্ঠানে শামসুজ্জামান খান নিজেই এই তথ্য দিয়েছেন। উপসংহারের উপস্থাপক প্রণব সাহার সঞ্চালনায় এই ফোকলোর গবেষক জানিয়েছেন রাজনীতি নাকি সাহিত্য-সংস্কৃতি কোনদিকে যাবেন- এ নিয়ে দ্বিধায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত সংস্কৃতিকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি । শামসুজ্জামান খান আরও জানান যে শেখ মনি বলেছিলেন যে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চেয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা সংস্কৃতিতে এগিয়ে, ‘তুমি সংস্কৃতির দিকেই থাকো’।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হয়ে যখন বাকশাল করলেন তখন বাকশালের চারজন সচিবের একজনের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান শামসুজ্জামান খান। তিনি জানান তখনো শেখ মনিই বলেছিলেন যে, এখন আর ছাড়া যাবে না। যদিও সরাসরি বাকশালে যোগ দেননি। কিন্তু যুক্ত হয়েছিলেন বাকশালের দাপ্তরিক কাজের সঙ্গে। এরপর তিনি বাংলা একাডেমিতেও যোগ দিয়েছিলেন শেখ ফজলুল হক মনির পরামর্শেই। অধ্যাপনা ছেড়ে বাঙালিত্ব, বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং বঙ্গবন্ধু রাজনীতির আর্দশকে এগিয়ে নিতেই বাংলা একাডেমিতে যোগ দিতেও শামসুজ্জামান খানকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন শেখ মনি। রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েও শিল্প-সংস্কৃতির একজন বড়মাপের গবেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন শামসুজ্জামান খান। দলীয় রাজনীতির ঘেরটোপ আটকাতে পারেনি এই লেখক-গবেষককে।
বঙ্গবন্ধুর লেখা বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং চীন ভ্রমণ নিয়ে যে বই, তার সবগুলোর সম্পাদনার কাজে যুক্ত ছিলেন। এখন কাজ করছেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকথা নিয়ে। শামসুজ্জামান ১৯৬৪ সালে ঢাকায় দাঙ্গার সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :