শাহীন চৌধুরী: দেশের প্রথম পারমাবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে দেশে দ্বিতীয় পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। এজন্য ইতোমধ্যেই পাঁচটি স্থানের বিষয়ে প্রাক সমীক্ষা চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দ্বিতীয় পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জায়গার বিষয়ে পরিবেশ, প্রতিবেশ, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সমীক্ষা করা হচ্ছে। তবে সবগুলো স্থানই বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলে। কর্মকর্তারা মনে করেন, প্রথম কেন্দ্রটি নির্মিত হলে দেশে বেশ কিছু দক্ষ লোক বেরিয়ে আসবে। যাদের সংস্পর্শে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চূড়ান্ত পরিণতির দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, যথা সময়েই উৎপাদনে আসতে সক্ষম হবে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও উচ্চ প্রযুক্তির হলেও পারমাণবিক বিদ্যুৎকে সাশ্রয়ী বিবেচনা করা হয়। যদিও ফুকুশিমা ও চেরনোবিল দুর্ঘটনার কারণে অনেকটা বিতর্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এ খাত। পাবনার রূপপুরে রুশ ফেডারেশনের কারগরি সহায়তায় দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলছে প্রথম প্রকল্পের কাজ। এখান থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। এর কয়েক মাসের ব্যবধানে উৎপাদনে আসবে দ্বিতীয় ইউনিট। কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান রোসাটম দাবি করেছে, সর্বাধুনিক ভিভিআর প্রযুক্তিতে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এতে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় কোনোরকম ঝুঁকি নেই।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রূপপুরের বর্জ্য রাশিয়া ফেরত নিয়ে যাবে। তবে এটি ফলাও করে প্রচার হোক, তা চান না রাশানরা। ফলাও হলে রোসাটম বিশ্বের যেখানে যেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে, সব জায়গা থেকে আবেদন উঠতে পারে। তাই তারা ফলাও করে প্রচারের বিপক্ষে। তবে বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রোসাটম।
এদিকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে কয়েকটি চীনা কোম্পানি। ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন প্রস্তাবিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে জাপানের এটমিক এনার্জি কমিশন এজেন্সিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সূত্রমতে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দুটি চীনা কোম্পানি দংফেং ইলেকট্রিক কর্পোরেশন (ডিইসি) ও চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএসসিইসি) ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি কমিশনে দেন দরবার শুরু করেছে কর্মকর্তারা বলেন, সরকার দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে রাজি। তবে এখন পর্যন্ত আগ্রহী বিদেশী কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রস্তাব চাওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৩০টি দেশে ৪৪৯ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদনে আসবে নতুন ১৭৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। চলমান এসব প্রকল্পের মধ্যে নতুন দেশ হিসেবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ জগতে প্রবেশ করবে ৩০টি দেশ। বাংলাদেশও হতে যাচ্ছে তার অংশীদার।
আপনার মতামত লিখুন :