চট্টগ্রাম প্রতিদিন : রাজধানীর গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সামনে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে গণভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৯.২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে এক সভায় বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের তো কোন সীমাই নেই। আপনাদের মনে আছে আমাদের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী আন্দোলন করেছিলেন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য। আজ আমরা সেই টানেল নির্মাণ করছি। তবে দুর্ভাগ্য যে তিনি আজ বেঁচে নেই। টানেল দেখে যেতে পারলেন না।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঠিক সমানভাবে আমরা সারা দেশে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এমনকি বগুড়ার মানুষ আমাদের ভোটই দেয় না, সেই বগুড়ার যত উন্নয়ন সব আমাদের হাতে হয়েছে। শুধু শহরে উন্নয়ন নয়, ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ স্লোগানে আমরা গ্রামেও উন্নয়ন করছি। আমাদের উন্নয়নের লক্ষ হচ্ছে গ্রামের মানুষও যেন সমান সুযোগ-সুবিধা পায়। যার কারণে আজ বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হতে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। নৌকা ছাড়া উন্নয়ন হয় না। নৌকা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নৌকার মাধ্যমেই সব অর্জন। আপনারা জনগণের কাছে যানে। নৌকায় ভোট চাইবেন। এখনও যেহেতু চট্টগ্রামের শিডিউল ঘোষণা হয়নি আমি ভোট চাইতে পারি, আমার সেই অধিকার আছে।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি জনগনের কাছে আমাদের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে পারেন জনগণ নিশ্চয় আমাদের ভোট দেবে, বিশেষ করে আমাদের মা-বোনেরা। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক সবার উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি। কোন শ্রেণিকে আমরা বাদ দিচ্ছি না। হিসেব করে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে বাস্তবায়ন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটাই কথা, ১৫ আগস্ট আমি বাবা-মা, ভাই-বোন সব হারিয়েছি। ছোট একটা বোন আর আমি একটা লক্ষ্য নিয়েই কাজ করি, যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা-মা জীবন দিয়ে গেছেন, লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন করেছেন সেই স্বপ্নটা পূরণ করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আমি বলবো, নিঃস্বার্থভাবে আপনারা দেশের সেবা করবেন। মানুষের জন্য কাজ করে মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনের চেয়ে বেশী কিছু নেই। সব নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার করা গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে একটা করে ফাইল। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ৪০ হাজারের বেশি পাতায় ৪৮ খন্ডে ৪৬টা ফাইল আছে। আমি ২০ বছর সেটার ওপর কাজ করেছি। যা ১৪ খন্ডে আমরা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে ৪টি খন্ড প্রকাশ হয়েছে। সেখানেই উঠে আসছে তিনি কার সাথে মিশেছেন। কার সাথে চলেছেন। তিনি কী করেছেন। সেখানেই বেরিয়ে আসছে ভাষা আন্দোলনে তাঁর সম্পৃক্ততা। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা।’
বক্তব্যের শেষ দিকে চট্টগ্রামের মেয়র ও কাউন্সিলর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড যাদের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করবে, আপনারা সবাই তাদের বিজয়ী করার জন্য কাজ করবেন।’
এ সময় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সমস্বরে বলেন, ‘আপনি যা বলেন আমরা সবাই সেভাবে কাজ করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাতে আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক হবে। এরপর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :