শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৮:০২ সকাল
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৮:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চেইন অব কমান্ড নেই বিএনপিতে

বাংলাদেশ প্রতিদিন : চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে বিএনপিতে। কেউ কাউকে মানেন না, গুরুত্বও দেন না। কেন্দ্র থেকে ঢাকা মহানগরের দেওয়া কোনো কর্মসূচিই এখন আর আগের মতো বাস্তবায়ন হয় না। সর্বশেষ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এর কিছুটা প্রতিফলন ঘটেছে। দলের মেয়র মনোনয়নের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েও কাউন্সিলর সমর্থনের ক্ষেত্রে হয়েছে ভিন্ন। ব্যক্তি পছন্দ বা বিতর্কিত অনেকেই বিএনপি থেকে ভোট করেছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে অপেক্ষাকৃত জনপ্রিয় বা ক্লিন ইমেজের নেতাদের মনোনয়ন দিতে ব্যর্থ হয় বিএনপি। এর প্রভাব পড়ে তৃণমূলে। এ কারণে দলটি বিদ্রোহী প্রার্থী দমাতে পারেনি। সিটি ভোটে দায়িত্ব পালন করা বিএনপির এক মধ্যসারির নেতা সাবেক এক এমপি বলেন, সিটি ভোটে নেতৃত্বের সমন্বয়ের অভাব ছিল চরমে। এক বিশৃঙ্খল পরিবেশ দেখা গেছে। কেউ কাউকে যে মানেন না, তা স্পষ্ট বোঝা গেছে। ভোট টানার জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। এজেন্টরা আসলেই ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আদৌ চেষ্টা করেছে কি না তার খোঁজখবরও কেউ রাখেনি। ভোটের দিন কোনো কোনো এজেন্টকে দেখা গেছে কক্সবাজার সি বিচে। ভোটের দিন পুলিশ কাউকেই হয়রানি করেনি। তারপরও কেন অধিকাংশ এজেন্ট কেন্দ্রে গেল না তার জবাবদিহিতাও নেওয়া হয়নি। জানা যায়, সিটি ভোটে দক্ষিণে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন গণজোয়ার সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। তার পক্ষে সিনিয়র নেতারা মাঠে সক্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস ও তার পত্নী আফরোজা আব্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ, নবীউল্লাহ নবীকে ইশরাকের পাশে দেখা গেছে সব সময়। উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও নিজের মতো করে চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু ইশরাকের মতো গণজোয়ার সৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেননি। এ ছাড়া উত্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের নেতা কিংবা অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের দূরত্ব অনেক বেশি ছিল। উত্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক স্থায়ী কমিটির সদস্যের সঙ্গে যুবদলের শীর্ষ নেতাদের দূরত্ব তৈরি হয়। এর প্রভাব পড়ে তৃণমূলে। উত্তরে কয়েকজন কাউন্সিলর সমর্থন নিয়েও ছিল বিরোধ।

জানা যায়, দলের ভিতরে-বাইরেও চেইন অব কমান্ড নেই। দলের সভা-সমাবেশেও সিনিয়র নেতারা পাত্তা পান না জুনিয়র নেতৃত্বের কাছে। সর্বশেষ বেগম জিয়ার মুক্তি দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের স্টেজে কয়েকশ নেতা-কর্মীকে উঠতে দেখা যায়। সিনিয়র নেতারা বারবার অনুরোধ করলেও কেউই অনুরোধ রাখেননি। এমনকি হুমকি দিয়ে কথা বলা হলেও কাউকে স্টেজ থেকে নামানো যায়নি। কার্যত, স্টেজেই এক বড় সমাবেশ লক্ষ করা যায়।

বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপিতে চেইন অব কমান্ডের ঘাটতি আছে, এটা তো অস্বীকার করা যাবে না। বিএনপির এখন উচিত, দ্রুত সম্মেলন করে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসা। বিশেষ করে তরুণ নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। যারা বার্ধক্যে পৌঁছেছেন তাদের অবসর নেওয়া উচিত। তাছাড়া লন্ডন থেকেও দল চালানো ঠিক নয়। সূত্রমতে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি এখন আর বাস্তবায়ন হয় না। বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকলেও গুটি কয়েক জেলায় নামকাওয়াস্তে কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়। বাকি জেলাগুলোতে কেন হয় না তার জবাবদিহিতাও নেওয়া হয় না। ঢাকা মহানগরেও একই অবস্থা। থানায় থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ডাকলেও তা বাস্তবায়ন হয় খুবই কম। এ নিয়েও নেই কোনো জবাবহিদিতা। কেন্দ্র বা মহানগরে দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশনা মানতেও চান না মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জানান, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও নেওয়া হয় না। কোথা থেকে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা স্থায়ী কমিটির সদস্যরা জানেন না। এক সদস্য আক্ষেপ করে বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে একটি ফাইল দেওয়া হয়। ওই ফাইল নিয়ে আসা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। সূত্রমতে, বিএনপির স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব এমনকি ঢাউস নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যেও অন্তর্কোন্দল লক্ষ করা গেছে। কেউ কাউকে মানতেই চান না। জেলা-থানা পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও বিরোধ স্পষ্ট। যেসব জেলায় আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে সেখানেও বিএনপি দ্বিধাবিভক্ত। এ নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, বিএনপির এখন উচিত দলের ভিতরে-বাইরে ঐক্য গড়ে তোলা। দলের ভিতরে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল দূর করতে হবে। নেতৃত্বে চেইন অব কমান্ড বজায় রাখতে হবে। তাহলেই যে কোনো আন্দোলন বা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়