শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৭:৫৫ সকাল
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৭:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীর্ঘদিন সরবরাহ বন্ধ, সংকটে থাকা নিউমোনিয়া ভ্যাকসিনের দাম দ্বিগুণ

নিউজ ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাজারে নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ব্যবহূত ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রেখেছে একটি ওষুধ কোম্পানি। ফলে বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে ভ্যাকসিনটির। এতে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে নিউমোনিয়া ভ্যাকসিনের দাম।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য সরকার শিশুদের নিয়মিত ইপিআই প্রোগ্রামের মাধ্যমে টিকা দিয়ে থাকে। এছাড়া শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধে নিউমোকক্কাল কনজুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি) নামের আরেকটি টিকা ব্যবহার করা হয়। এর বাইরে শুধু নিউমোভ্যাক্স-২৩ নামের একটি ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়। ওষুধ কোম্পানি সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড দেশে এ ভ্যাকসিনের একমাত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। অনেকদিন ধরেই ভ্যাকসিনটির সরবরাহ বন্ধ রেখেছে সানোফি। ফলে বাজারে এখন ভ্যাকসিনটির সংকট দেখা দিয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী এখনই ভ্যাকসিন সরবরাহ করা না গেলে আক্রান্ত শিশুদের নিউমোনিয়ায় মৃত্যুঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা ফারজানা হোসাইন শিখা। সম্প্রতি তার একমাত্র কন্যাসন্তান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটিকে নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন ‘নিউমোভ্যাক্স-২৩’ প্রয়োগের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। খোঁজ করে হাসপাতালসংলগ্ন ফার্মেসিগুলোয় পাওয়া যায়নি ভ্যাকসিনটি। পরে অনেক জায়গা ঘুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের একটি ফার্মেসিতে ভ্যাকসিনটির খোঁজ পান ফারজানা হোসাইন শিখা। এক্ষেত্রে তাকে একটি ভ্যাকসিনের জন্য দাম গুনতে হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টাকা, যা এক বছর আগেও ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা।

চিকিৎসকরা জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে সুস্থ করে তুলতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হয়। অন্যথায় শিশুর মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়। কিন্তু বাজারে সহজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ভ্যাকসিনটি। যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর একদিকে দাম বাড়তির দিকে, অন্যদিকে মানও প্রশ্নবিদ্ধ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যাদের কাছে ভ্যাকসিনটি রয়েছে, তারা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন। এমনকি ভ্যাকসিনের গায়ে নতুন দাম বসিয়ে দ্বিগুণ মূল্য নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া অতিমুনাফার আশায় কেউ কেউ ভারত ও চীন থেকে অবৈধ পথে কিছু মানহীন ভ্যাকসিন নিয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে শীতকালে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ায় অনেকেই এখন এ ভ্যাকসিন কিনতে গিয়ে ব্যাপক ভোগান্তি ও হয়রানিতে পড়ছেন।

বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের এক অধ্যাপক  বলেন, অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, অপুষ্টি, শীত ও বায়ুদূষণের কারণে রাজধানীসহ সারা দেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আক্রান্তের অধিকাংশই শিশু। দেশে বর্তমানে নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ব্যবহূত ভ্যাকসিন নিউমোভ্যাক্স-২৩-এর চাহিদার তুলনায় জোগান অনেক সীমিত। সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড এ ভ্যাকসিন তৈরি করে। এক বছর এ ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রেখেছে তারা। কিছু ভ্যাকসিন অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসছে, যার মান নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে আইসিডিডিআর,বির ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ ড. সানয়ারুল বারী বলেন, সানোফি কোম্পানির ভ্যাকসিন সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। শিশুকে নির্ধারিত সময়ে এ ভ্যাকসিন দিতে না পারলে অনেক সময় মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়। অন্যান্য দেশে চাহিদা ও দাম বেশি পাওয়ায় বাংলাদেশে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে কোম্পানিটি।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. রুহুল আমিন বলেন, সানোফি কোম্পানি ভ্যাকসিনটি সরবরাহ করে। তারা বর্তমানে সরবরাহ বন্ধ রাখলেও জনতা বাংলাদেশ নামের এক কোম্পানি আমেরিকার একটি কোম্পানি থেকে ভ্যাকসিন আমদানির জন্য রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে। আশা করি, কিছুদিনের মধ্যে ভ্যাকসিনের বাজার স্বাভাবিক হবে।

বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুধু নিউমোভ্যাক্স-২৩ নয়, বাজারে বিভিন্ন রোগের আরো কিছু ভ্যাকসিনের সংকট রয়েছে। বাংলাদেশে এসব ভ্যাকসিনের অধিকাংশই সরবরাহ করে বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানি। সেসব কোম্পানির অধিকাংশই এখন ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এ সুযোগে যেসব ফার্মেসির কাছে এসব ভ্যাকসিন আগে থেকে সংগ্রহ করা ছিল, তারাও সেগুলো দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। খবর : বণিক বার্তা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়