ওবায়দুর রহমান সোহান, ঢাবি প্রতিনিধি: মঙ্গলবার (১১ই ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে বেলা ১১ টায় এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক ড. তালুকদার মনিরুজ্জামানের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুনর রশীদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী, বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস হোসাইন, ড. তালুকদার মনিরুজ্জামানের ছেলে ড. সাদেক মুনিরসহ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকও শিক্ষার্থীরা।
সভায় অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যে মানুষটি একজন খ্যাতিমান মানুষ, রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে যিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। উনার সাথে আমার খুবই আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। আমি তার বাড়িতেও গিয়েছিলাম। উনি এতই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতো যে যখন আমি উনার বাসায় যাই তখন দেখি উনি লুঙ্গি এবং শার্ট পরে বসে আছেন। সব কাজে আমাকে অনেক পরামর্শ দিতেন। আমার শিক্ষকও বটে উনি। আমার পিএইচডি করার ক্ষেত্রে উনি আমাকে সাহায্য করেছেন। বিভ্রান্তির মধ্যে সত্যতা থাকেনা। সত্যতা থাকে সরলতায়। তালুকদার সাহেব সেরকমই একজন মানুষ।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমা চৌধুরী বলেন, তালুকার মনিরুজ্জামান আমাদের আইডল ছিলেন। রাজনীতি নিয়ে উনার লেখা আমাদের কাছে বাইবেলের মত। আমি উনার স্ত্রী রাজিয়া আক্তার বাণুর পিএইচডি সুপারভাইজার ছিলাম। আমি কখনো আপনাকে ভুলতে পারিনা তালুকদার। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগের প্রবর্তন করেন ড.নাজমা চৌধুরী।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. হারুনর রশীদ বলেন, একজন শিক্ষকের স্মরণ সভায় একজন ছাত্রের দাড়িয়ে কথা বলা অনেক কঠিন। তালুকদার স্যার ব্যক্তিগতভাবে শুধু আমার শিক্ষকই ছিলেন না, উনার আর আমার পরিবার এমনভাবে যুক্ত ছিল যেন একই পরিবারের সদস্য। তিনি আমার পিতৃতুল্য শিক্ষক। এটা আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা উনার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছি। শহীদ জিয়াউর রহমান উনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি স্বসম্মানে তা প্রত্যাখান করেন। আমি তার প্রয়াণের সময় দেশে ছিলামনা। কিন্তু তার ছেলের মেসেজে জানতে পারি। মানুষ মূলত তার কর্মের মাঝেই বেঁচে থাকে। উনি আর নেই। আমরাও এক সময় চলে যাব। মানুষ তার পদ পদবি দ্বারা বেঁচে থাকেনা। তালুকদার মনিরুজ্জামান স্যারও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
প্রথম আলোর সিনিয়র লেখক মিজানুর রহমান বলেন, আমি উনার অনেক সাক্ষাৎকার নিয়েছি। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র না হলেও উনি আমাকে ছাত্র হিসেবে দেখতেন। ১৯৯৫ সালের আমার একটা বইয়ে আমাকে তিনি ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন। কেউ যদি আমার মেন্টর কে জিজ্ঞেস করে তাহলে আমি বলব তিনি আমার মেন্টর। হিসাব বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও আমাকে তিনি আমাকে এত সাহায্য করেছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়। সম্পাদনা: তিমির চক্রবর্ত্তী
আপনার মতামত লিখুন :