তিমির চক্রবর্ত্তী: করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে চামড়া শিল্পে। চীননির্ভর চামড়া রপ্তানির বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। তাই রপ্তানি সংকটে থাকা চামড়া খাত এবার মহাসংকটে পড়েছে। এতে ট্যানারিগুলোতে চামড়ার মজুদ বেড়ে ৭০ লাখ বর্গফুটে পৌঁছেছে। এর রপ্তানিমূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা। আগে থেকেই সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরী পরিবেশবান্ধব চামড়া উৎপাদন না হওয়ায় ইউরোপের ক্রেতারা চামড়া কিনছে না। ইউরোপের বাজার বন্ধের পরে চীনের বাজারেই ৬৫ শতাংশ ফিনিশড চামড়া রপ্তানি হতো। চীনে করোনাভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘায়িত হলে দেশের চামড়া খাত পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়বে। সূত্র: সমকাল
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, পরিবেশবান্ধব চামড়া উৎপাদনের লক্ষ্যে শিল্প স্থানান্তর হলেও শেষ পর্যন্ত অপরিকল্পিতভাবেই হয়েছে। এ কারণে ইউরোপের বাজার হারাতে হয়েছে। এরপর একক দেশ হিসেবে চীনে ৬৫ শতাংশ চামড়া ও চামড়াপণ্য রপ্তানি করা হয়। করোনাভাইরাসের কারণে যেসব ঋণপত্র, রপ্তানি আদেশ ও পণ্য সরবরাহ আদেশ পাওয়ার কথা তা আসেনি।
লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও পিকার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ফিনিশড লেদারের সিংহভাগ চীনে রপ্তানি হয়। করোনাভাইরাসের কারণে চীনে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এই ভাইরাসের প্রভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ চামড়া ও চামড়াপণ্য রপ্তানি কমে যাবে। এ ছাড়া চামড়াপণ্য তৈরির নানা উপাদান চীন থেকে আসে। বিশ্বজুড়ে এখন মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের প্রভাব সব বাজারে পড়বে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ট্যানারি স্থানান্তরের পর থেকেই কমছে রপ্তানি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াপণ্য রপ্তানি হয়। গত অর্থবছরে চামড়াশিল্প পরিবেশবান্ধব না হওয়ায় তা আরও কমে প্রায় ১০২ কোটি ডলারে নেমেছে। চলতি অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) ৫৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলারের চামড়া পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, সাভারে চালু থাকা ১২৩টি ট্যানারির মধ্যে বেশিরভাগই চীনে চামড়া রপ্তানি করে। ফলে ভাইরাসের প্রভাবে ট্যানারিগুলোতে এখন উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে।
চীন থেকে চামড়াপণ্য তৈরির নানা উপকরণ আমদানিতে সমস্যায় পড়তে হবে। এর ফলে রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। যা জাতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিরুপ প্রভাব পড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :