শিরোনাম
◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৮:১২ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৮:১২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভোট নিয়ে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটছে, বললেন মোহাম্মদ এ আরাফাত

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আশিক রহমান : সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেছেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অনেক কম ছিলো যারা বলছেন, তাদের সঙ্গে একমত নই আমি। তবে আপনি যদি জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করেন তাহলে মনে হবে অনেক কম ভোট পড়েছে, কিন্তু বিগত দিনের সিটি নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতির সঙ্গে যদি সদ্যসমাপ্ত ঢাকা সিটি নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতি তুলনা করেন তাহলে দেখবেন, ভোটার উপস্থিতি কম, তবে অনেক কম নয়।

২] তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে যতোগুলো সিটি নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছিলো ৫৪ শতাংশ, সেটা একবারই মাত্র, যখন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মির্জা আব্বাস ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ প্রার্থী ছিলেন। এরপর আর কোনো সিটি নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। সবসময়ই ৫০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে। ২০২০ সালের ঢাকা সিটি নির্বাচনের আগে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ২০১৫ সালের নির্বাচনে, সেবার ৩৭ শতাংশ ভোট পড়েছিলো। সর্বনিন্ম ভোটের সঙ্গে তুলনা করলে এবার দক্ষিণে ২৯ শতাংশ ভোট পড়েছে, এটা কম তবে তা অনেক কম নয়। উত্তরে যদিও ২৫ শতাংশ পড়েছে, সেখানে কিছুটা কম ভোট পড়েছে। জাতীয় নির্বাচনের মতো ৭৫-৮০ শতাংশ ভোট সিটি নির্বাচনে কখনোই পড়েনি। ৩] বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থাহীনতারই বহিঃপ্রকাশ ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম। আসলেই কি তাই? ভোটার অনুপস্থিতির কারণ আসলে কী, তা কি সত্যিই কেউ ক্ষতিয়ে দেখেছেন? আমার মতে, সিটি নির্বাচনে ভোটারদের অনাস্থা যতোটা না নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য, তার চেয়ে বেশি অপপ্রচার হয়েছিলো অনাস্থা তৈরির জন। ভোটারদের মধ্যে অনাস্থা তৈরির জন্য যতো কথা বলছিলো বিএনপি বা সিভিল সোসাইটির পক্ষ থেকে, নির্বাচন নিয়ে যতো নেতিবাচক কথা তারা বলেন, তাতে তো জনগণের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হতে পারেই।

৪] অতীতে যেসব নির্বাচন সর্বজন গ্রহণযোগ্য হয়েছে, সেসব নিয়ে বিভিন্ন রকম অভিযোগ বা নালিশ ছিলো। কিন্তু সেই নির্বাচনগুলো নিয়ে কোনো অপপ্রচার হয়নি। বিগত এগারো বছরে আওয়ামী লীগের আমলে যতো নির্বাচন হয়েছে, সেখানে বিএনপি কী করেছে? সারাদিন ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে আলোচনা করেছে। কিন্তু যখনই বিএনপি জিতেছে, সেই নির্বাচন নিয়ে আর অপপ্রচার হয়নি। অভিযোগও উধাও হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে সেই নির্বাচনগুলো সর্বজনগ্রাহ্য হয়েছে। অপরদিকে যে নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে, সেই নির্বাচনগুলোর ছোটখাটো বিচ্যুতি নিয়ে সবসময় আলোচনা ও অপপ্রচার হয়েছে। যার ফলে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে।

৫] ভোটার অনুপস্থিতি নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত নই। কারণ যার মনে হবে কেন্দ্রে আসবেন, ভোট দেবেন। আমার তো কোনো প্রয়োজন নেই মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে ৮০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করার। কারণ উন্নত বিশে^ও ১০ কিংবা ১৫, ২০ বা ২৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি থাকে। তারা তো এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এ নিয়ে তারা উদ্বিগ্নও থাকে না।
৬] উন্নত বিশে^র রাজনৈতিক পরিবেশ আর আমাদের দেশের পরিস্থিতি এক নয়। তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনাও চলে না। কিন্তু আমাদের নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন তো ঘটতে পারে। আজ থেকে ৩০ বছর আগে নির্বাচন বা ভোট মানুষ যেভাবে নিতো, এখন যে সেই আগের মতোই নেবে, তার কি নিশ্চয়তা আছে। নেই। নেই তার প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে নির্বাচনে। ৭] এখন যারা নতুন ভোটার, তারা পুরো বিশ^কে দেখে। তাদের কাছে ভোটের চেয়ে প্রায়োরিটি অন্য কিছু চলে এসেছে। ৩০ বছর আগে মানুষ নির্বাচন বা রাজনীতি যেভাবে দেখতো, নতুন প্রজন্ম সেভাবে না-ও দেখতে পারে। ভোট বা নির্বাচন যে চিরকালীন উৎসবের মতো করে থাকবে বা হবে তা নেসেসারি নয়।

৮] মানুষের মধ্যে যখন অসন্তোষ থাকে, যখন পরিবর্তন চায়, তখন তারা উদ্যোগ নিয়ে ভোট দিতে যায়। গাড়ির না থাকা বা ঠা-া কিংবা লম্বা সিরিয়ালও তখন বাধা হয় না। কিন্তু যখন মানুষের মধ্যে ওভারঅল কোনো অসন্তুষ্টি থাকে না, মানুষ মনে করে কোনো পরিবর্তনের দরকার নেই, যারা ক্ষমতায় আছে, তাদের প্রতি আস্থা আছে, এমন পরিস্থিতিতেও মানুষ অনেক সময় ভোট দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। ৯] বিগত এগারো বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের মধ্যে তো ওভারঅল কোনো অনাস্থা বা অসন্তুষ্টি নেই। তা যে নেই ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট বা আইআরআই-এর জরিপ দেখুন, অধিকাংশ মানুষই মনে করছে রাষ্ট্র বা সরকার সঠিক পথেই আছে। ওই জরিপ বলছে, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে, বিরোধীদলের জনপ্রিয়তা কমেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়