হুমায়ুন আইয়ুব : ২. ‘হজরত’ আরবী শব্দ। অর্থ নৈকট্য, নেতা, জনাব, সম্মানসূচক উপাধি, সম্মানিত ব্যক্তি, আশ্রয়স্থল ইত্যাদি। (ফীরোযুল লুগাত (উর্দু)। ৩. সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাদের নামের শুরুতে হজরত, জনাব ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। যেমন : হজরতুল উস্তায/আদ-দাকতূর, হজরতুল মুহতারাম ইত্যাদি (মু’জামুল লুগাতিল আরাবিইয়াহ আল-মু’আছারাহ ১/৪০১, ৫১৪)। ৪) আরবি ভাষায় হজরত শব্দের ব্যবহার বহু পূর্ব থেকেই চালু আছে। ইমাম যাহাবী, হাফেজ ইবনু কাছীর (রহ.) প্রমুখ বিদ্বানরা সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে এ শব্দ ব্যবহার করেছেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ১০/৫৫২, আল-বিদায়াহ ১৩/২৬১)।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে বেয়াকুফ বলে হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানালেন এক অগ্নি নির্বাপণকর্মী। গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সামগ্রী নিয়ে আর্কাইভ হচ্ছে। সন্তানের কান্না শুনে মৃত্যুর চার ঘণ্টা পরে বেঁচে উঠলেন মা। ৫. ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, প্রত্যেক দেশের প্রচলিত সর্বোচ্চ সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। যেমনটা আরব দেশে উপনাম দিয়ে ডাকাকে সম্মানসূচক মনে করা হতো। যেমন : আবুল কাসেম, আবু হুরায়রা, আবু হাফছ ইত্যাদি। বর্তমানে সেখানে শায়েখ, সাইয়্যেদ, বহুবচনে সাদাত, সাইয়েদাত ইত্যাদি বলা হয়। এছাড়া ইংরেজিতে ইয়োর অনার, হিজ ম্যাজেস্টি, ইয়োর এক্সেলেন্সি এবং জাপানে সান, সামা, চ্যান ইত্যাদি। একইভাবে আমাদের উপমহাদেশে জনাব, হজরত, হুজুর, মাওলানা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়। এটা নবীদের ক্ষেত্রেই শুধু ব্যবহৃত এটা ভুল। ৬. আমরা বাংলায় জনাব বলতে যা বোঝাই হজরত অর্থও তাই। এটা নারী-পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্বাভাবিক অর্থে হজরত একটি ধর্মীয় শব্দ হিসেবেই পরিচিত। সেটা কেবলই সম্মানার্থে যে ব্যবহার না হয়ে ধর্মীয় পরিচয়ে ব্যবহার হয় সেটা জানার একটি অন্যতম কারণ হলো আমাদের বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে কেবলই ইসলাম ধর্ম সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞজনদের নামের আগে হজরত শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
৭. ভাবগতভাবে হজরত শব্দটির বেশ কয়েকটি প্রতিশব্দ বা ভিন্নার্থ আছে। বিশেষ করে নবী রাসূলদের নামের আগে যখন হজরত শব্দটি ব্যবহৃত হয় তখন তা ধর্ম প্রচারক হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে বলে ভাষাবিদ এবং সাবেক কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান তার যথাশব্দ গ্রন্থে বলেছেন। ৮. আবার অন্য অর্থ বুঝতে গিয়ে এই শব্দের অর্থ তিনিই আবার বলছেন আদেশকর্তা বা প্রভু। হজরত শব্দের যথাশব্দ হিসেবে তিনি রাজা অধিনায়ক প্রতিপালক সম্রাট সুলতানসহ এ ধরনের অনেক শব্দ ব্যবহার করেছেন। অভিজন বা অভিজাত শ্রেণি হিসেবেও হজরত শব্দটিকে চিহ্নিত করেছেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। ৯. তুরস্ক এবং বসনিয়া অঞ্চলের হাযরিতি শব্দ থেকেই হজরত শব্দটির উৎপত্তি এবং সে সময় কেবল নবী-রাসূলদের নামের আগেই এই শব্দটি ব্যবহার হতো। ধারণা করা হয় কেবল দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল ছাড়া আর কোথাও কোনো ইসলামী প্রবক্তার নামের আগে হজরত শব্দটি ব্যবহার হয় না। অঞ্চলগত কারণে আমাদের এখানে এই হজরত শব্দটি হয়তোবা সম্মানিত বা মাননীয় অর্থে ব্যবহার করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :