শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৭:০৮ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৭:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে ভারতে সাম্প্রদায়িক উস্কানি

মাজহারুল ইসলাম : বাংলাদেশের একটি মন্দিরে হামলা চালানো হচ্ছে, এমন একটি ভিডিও গত কয়েক দিন ধরেই ভারতের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিজেপি সমর্থকরা। তাদের দাবি– বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে ‘মুসলিম জিহাদি বাহিনী’ এই বর্বর আক্রমণ চালিয়েছে। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী পাস নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। কালেরকণ্ঠ

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ধর্মীয় নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে এমন খবর প্রচার করে ওই ভিডিওটি শেয়ার করে অনেকেই মোদি সরকারের এনআরসিকে সমর্থন জানিয়েছেন। অথচ বিষয়টি আদৌ তেমনটি নয়। মুসলিম জিহাদি বাহিনী নামে কোনও গ্রুপের অস্তিত্ব ছিলো না ওই ঘটনায়। ভিডিওতে দেখা সংঘর্ষটি ছিলো ওই মন্দিরের অন্তর্দ্ব›দ্বীয় কলহ। যা ১৭ জানুয়ারি নেত্রকোনার এক ইসকনের মন্দিরে ঘটেছিলো। এ বিষয়ে ওই মন্দিরের প্রেসিডেন্ট জয়রাম দাস গণমাধ্যমকে বলেন, হামলাটিকে নিয়ে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানো হচ্ছে ভারতে। বিষয়টি আদৌ তেমনটি ছিলো না। একটি দেবোত্তর সম্পত্তির জবরদখল ঠেকানোর জন্য মন্দিরের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, ২৫ হিন্দু ও তাদের মদদদাতা কয়েকজন মুসলমান মিলে ওই জমিটি জবরদখল করে। এখানে বাইরের কোনও গোষ্ঠী হামলা চালায়নি। এটি মূলত হিন্দুদের নিজেদের মধ্যে জমিসংক্রান্ত একটি গণ্ডগোল মাত্র।

ভিডিওটি নিয়ে গবেষণা করেছে ভারতে দুটি নির্ভরযোগ্য মিডিয়া ফ্যাক্ট চেক টিম, ‘দ্য কুইন্ট’ ও ‘অল্ট নিউজ’। তাদের বক্তব্যও ওই মন্দিরের প্রেসিডেন্ট জয়রাম দাসের সঙ্গে মিলে গেছে। গবেষণায় অংশ নেয় ওই দল দুটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বলে ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটির সঙ্গে ইসলামী জিহাদি হামলার দূরতম কোনও সম্পর্ক নেই। একটি জমির দখল কেন্দ্র করে স্থানীয় হিন্দুদের সঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষের সংঘর্ষ ঘটে। হামলাকারীরা প্রায় সবাই ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এ হামলার ঘটনা মন্দিরের কর্মকর্তারা স্বীকারও করেছেন। নেত্রকোনার থানা পুলিশের এজাহারেও একই বক্তব্য রয়েছে।

ওই ঘটনায় নেত্রকোনা পুলিশের কাছে দায়ের করা এফআইআরে মন্দির কর্তৃপক্ষ যাদের নামে অভিযোগ করেছে, তাদের বেশিরভাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীর। গত জানুয়ারি মাসের এ ঘটনার সপ্তাহখানেক পর ‘এফএম হিন্দু’ নামে ভারতের দক্ষিণপন্থী হিন্দুদের একটি গ্রুপ ফেসবুকে সেই ঘটনার ভিডিওটি আপলোড করে ক্যাপশন দেয়, বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার ইসকন মুক্তারপুর মন্দিরে হামলা চালিয়েছে মুসলিম জিহাদি বাহিনী। এতে ৩জন ভক্ত মারাত্মক আহত হয়েছে। ২০ জানুয়ারি জগদীশ মুরারি দাস নামে একজন ভারতীয় হিন্দু ধর্মপ্রচারক নিজের ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে একই গুজব ছড়ান। এরপর তার ওই পোস্ট টুইট করেন বিজেপি সমর্থিত জনসঙ্ঘ দলের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের চয়ন চ্যাটার্জি। তিনি লিখেন, ইসকনের নেত্রকোনা মুক্তারপুর মন্দিরে হামলা চালিয়েছে মৌলবাদী গোষ্ঠী। ৩জন কৃষ্ণভক্ত গুরুতর আহত। শুধু দেখুন, বাংলাদেশে হিন্দুরা আজও কতোটা বিপদের মুখে। ভারতে যারা নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরোধিতা করছেন তারা জবাব দিন।

একই বক্তব্য দিয়ে ২৩ জানুয়ারি সেই ভিডিও টুইট করেন বিজেপির যুব শাখার তথ্যপ্রযুক্তি সেলের আহ্ববায়ক অভিজিৎ বসাক। সেখানে তিনি লেখেন, হিন্দুরা বাংলাদেশে নিরাপদ নয়। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি রিটুইট করে অভিজিৎ বসাকের সেই টুইট। এভাবেই বাংলাদেশকে দোষারোপ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবে ওঠেন বিজেপি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়