ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ইতালিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর অব্যাহত সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বুধবার ইতালিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে নয়দফা যৌথ ঘোষণায় শেখ হাসিনা এই সমর্থন প্রত্যাশার কথা বলেন। তিনি ইতালিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। এ সময় উভয়পক্ষই রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে গত ২৩ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিশ্বসম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেছেন।
বৈঠকে জিউসেপ কোঁতে ইতালির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া বৈঠকে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বর্তমান সহযোগিতার অতিরিক্ত আরও ১০ লাখ ইউরো দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে ইতালি। খবর বাসসের।
ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন পালাজো চিগিতে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, প্রায় এক ঘণ্টার এ বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং দুই দেশের মধ্যকার বর্তমান অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আলোচনাকে ‘ফলপ্রসূ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
জিউসেপ কোঁতে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভ‚য়সী প্রশংসা করেন। প্রেস সচিব তার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া আপনার ‘সুপার হিউম্যান’ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ইতালি রোহিঙ্গাদের জন্য বর্তমান সহায়তার অতিরিক্ত আরও ১০ লাখ ইউরো দেবে। এ সহায়তা ইউএনএইচসিআর-এর মাধ্যমে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, জিউসেপ কোঁতে দুদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ইতালি অনেক পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানির প্রস্তাব দিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগের জন্য ইতালির উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা সহজ করতে ইতালি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
জিউসেপ কোঁতে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সাফল্যের ভ‚য়সী প্রশংসা করে বলেন, ইতালিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রমী। তিনি ঢাকায় হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের সরকার প্রধান মুজিববর্ষের কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত মঙ্গলবার ইতালির রাজধানী রোমে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে তিনি পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
খোলাকাগজ
আপনার মতামত লিখুন :