মশিউর অর্ণব: ইসলাম ধর্মকে ‘ঘৃণার ধর্ম’ হিসেবে অভিহিত করে ফ্রান্সে এক কিশোরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেওয়ার পর দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একজন মুসলিম ব্যক্তি মিলা নামক ঐ ১৬ বছর বয়সী কিশোরীটিকে ‘নোংরা লেসবিয়ান’ বলে মন্তব্য করার পর মিলা অনলাইনে ঐ পোস্টটি দেয়। বিবিসি
পোস্টের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে মিলা জানায়, এই বিতর্কের কারণে তার জীবন কার্যত থমকে আছে। এসিডে ঝলসে দেয়া, আঘাত করা এবং জনসমক্ষে নগ্ন করা কিংবা জীবন্ত কবর দেয়ার হুমকিও পেয়েছেন মিলা। এসব হুমকির কারণে তাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছে। ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী জাঁ মিশেল ব্লঙ্কে জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ মিলাকে শান্তিপূর্ণভাবে স্কুল ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টায় আছে, যাতে সে তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
ইনস্টাগ্রাম পোস্টকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নে তুমুল বিতর্ক চলছে। ফ্রান্সে কোনো জাতীয় ব্লাসফেমি আইন নেই, একইসাথে ফ্রান্সের সংবিধানও কট্টরভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ।
বিতর্ক চরম আকার ধারণ করার পর টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিলা তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি বন্ধ রেখেছে সে। টিএমসি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মিলা সেইসব মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, যারা কেবল ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ নিজেদের ধর্ম পালন করে, এবং নিজের বক্তব্যের অশালীনতার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। একইসাথে মিলা নিজের বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, ‘আমি যা বলেছি তা নিয়ে আমার কোনো অনুশোচনা নেই। এটা একদমই আমার নিজস্ব চিন্তা।’
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্তফ ক্যাস্তানার দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে জানিয়েছেন, বর্তমানে মিলা ও তার পরিবারকে সুরক্ষা দিচ্ছে পুলিশ। এই বিষয়ে ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অব দ্য মুসলিম ফেইথের প্রধান মোহাম্মদ মুসাবির বলেন, যতো মারাত্মক বক্তব্যই একজন মানুষ দিয়ে থাকুক না কেন, তাতে কোনভাবেই হত্যার হুমকি দেয়া জায়েজ হয় না।
ইতোমধ্যেই মিলার একদল সমর্থকগোষ্ঠিও দাঁড়িয়েছে, যারা #JeSuisMila হ্যাশট্যাগ চালু করেছে, যা রীতিমত ট্রেন্ডিং হয়েছে ফ্রান্স জুড়ে। #JeSuisMila অর্থ ‘আমিই মিলা’।
আপনার মতামত লিখুন :