গুলজার হোসেন উজ্জ্বল : মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা যাবে না বলে মনে করে বাংলার সংখ্যাগুরু মুসলিম। এই মুসলিম সমাজের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে হেফাজতে ইসলাম। নাম শুনলেই বোঝা যায় তারা ইসলামের হেফাজত করতে আবির্ভূত হয়েছে। তাদের এই দায়িত্ব কেউ দেয়নি, নিজেরাই নিয়েছে। তবে কার্যত তারা ইসলামের নামে মাস্তানি করে। দুইদিন পর পর সরকারকে একেকটা ইস্যুতে চাপে ফেলে নানা রকম দরকষাকষি করে ফায়দা তোলে। সরকার গায়ে পিঠে হাত বুলিয়ে একটু হালুয়া রুটির বন্দোবস্ত করে তাদের শান্ত করে। দুইদিন পর আবার আরেকটা ইস্যু নিয়ে একই রকম নাটক মঞ্চস্থ করে। এখন আছে কাদিয়ানী ইস্যু নিয়ে। কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা করতে হবে। কে খাঁটি মুসলিম, কে কাফের সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের নয়। শফী বা বাবুনগরীর নয়। কোনো মানুষেরই নয়। কাদিয়ানীরা যদি মুসলিম নাও হয়ে থাকে সেটা তাদের ব্যাপার। তারা তো কাদিয়ানিই। তাদেরও নিশ্চয়ই একটা ধর্মানুভূতি আছে। তাহলে সেই অনুভূতিতে আঘাত করার আপনি কে? শুধু আঘাতই না আপনি রীতিমতো তাদের থ্রেট দিচ্ছেন প্রকাশ্যে। আপনি তাদের কাফের বলছেন।
ঘৃণাবাদ ছড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে। তাদের রুদ্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। এটা তো আপনি করতে পারেন না। আর আপনার এতো ভয়ই বা কিসের? তারা তাদের মতবাদ প্রচার করতেই পারে। যার ভালো লাগবে না সে কাদিয়ানী হবে না। কিন্তু না একশ্রেণির মমিন মুসলমান জোর করে তাদের উৎখাত করবে। আবার এই তারাই বলছে আমাদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত করা যাবে না। কী হাস্যকর।
কাদিয়ানীদের মসজিদে পুলিশ পাহারা দিয়ে রাখে। প্রতি শুক্রবারে সকাল এগারটা থেকে কড়া নিরাপত্তা থাকে। লজ্জা লাগে না এটা দেখলে? ২. শফী হুজুরের মঞ্চ ভেঙে পড়েছে। এই মঞ্চে শখানেক লোক উঠেছিলো। এতো লোক মঞ্চে উঠার কী প্রয়োজন ছিলো? আসলে এটাও আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতোই একটা ব্যাপার। ব্যক্তিকেন্দ্রিক ফায়দা লোটার ফান্দা। তাই সবাই মঞ্চে উঠতে চায়। ভাগ্য ভালো মঞ্চ ভাঙলেও কেউ তেমন হতাহত হয়নি। তবে কেউ বলছেন, এটা আল্লাহপাকের নিশানা। গজবের পূর্বাভাস। কেউ বলছেন আল্লাহ তার নেক বান্দার পরীক্ষা নিয়েছেন। কেউ বলছেন কাদিয়ানীদের প্রতি আল্লাহর এটা পজিটিভ ম্যাসেজ। গ্রামে একটা প্রবাদ আছে : ‘কৃষ্ণ দেখতে কেমন যার মনে যেমন’। লালন সাঁইজি সাধে বলেননি আত্মতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সে হয়েছে। নিজেকে বোঝেন আগে। নিজের ভেতরে কুবৃক্ষের বীজ বুনেছেন। সুফল হবে কোত্থেকে? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :