শিরোনাম
◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:০৯ দুপুর
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:০৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে হিমালয়ের, ২১০০ সাল নাগাদ গলে যাবে সব হিমবাহ

মাজহারুল ইসলাম : ফলে জমাট বাঁধতে পারছে না পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বতশৃঙ্গের হিমবাহে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হিমালয় থেকে নেমে আসা নদীগুলো। অথচ এই সময়টায় হিমালয়ের পশ্চিমাংশের পর্বতগুলো বরফে ঢাকা থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেছে, এখন এখানকার তাপমাত্রা অনেক বেশি। যা প্রায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ডয়চে ভেলে

৩০ বছর ধরে হিন্দু যোগী স্বামী ধর্মানন্দ এখানে থাকেন। পরিবর্তনগুলো নিজের চোখে দেখেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ১৯৯০ সালে যখন আমি এখানে প্রথমবার আসি, তখন আরও ১০০ মিটার নিচে হিমবাহ ছিলো। এর মুখটা ছিরো অনেক নিচে। পুরো নদী বরফের চাদরে ঢাকা থাকতো এবং যে কোনো সময় হেটে নদী পার হওয়া যেতো। তা কখনোই গলতো না। এখনও পুরনো ব্রিটিশ মানচিত্রে সেই বরফের তীর দেখা যায়। যা এখন আর নেই।

পিন্ডারি হিমবাহে বরফের আস্তরণ খুব বেশি চোখে পড়ে না। নদীর ওপর বরফের আবরণ নেই। এমনকি নদীর পানির উৎস এখন হুমকির মুখে। এ নিয়ে কাজ করছেন ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অব হিমালয়ান জিওলজির হিমবাহ বিশেষজ্ঞ ড. ডি পি ডোবহাল। তিনি বলেন, আজ এই হিমবাহের দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। পর্বতের খাড়া ঢালের পাথুরে গায়ের মাঝে এটি আটকে আছে। বেশি খাড়া হওয়ার কারণে এই বরফ গলার হারও বেশি। হিমবাহ জড়ো হওয়ার জায়গাও কমে গেছে। তাই এখন শীতকালে খুব অল্পই বরফ জমে। ৩ হাজার ৮০০ মিটারের ওপরে বরফ নেই বললেই চলে। অন্য হিমবাহগুলোও সমান্তরাল ট্র্যাকে। গত ১০০ বছরে গাঙ্গোত্রী, যেখান থেকে হিন্দুদের পবিত্র নদী গঙ্গার উৎপত্তি, তার অর্ধেক বরফ হারিয়ে গেছে। ড. ডোবহালের বলেন, আগে তুষারপাত শুরু হতো সেপ্টেম্বরের শেষে অথবা অক্টোবরের শুরুতে। নিয়মিত বিরতিতে বেশ অনেকখানি তুষার পড়তো। তুষারগুলো জমে বরফ হতে যথেষ্ট সময়ও পেতো। কিন্তু এখন অক্টোবর-নভেম্বরেই বরফ গলতে থাকে।

এখানে বৃষ্টিপাতের ধরনও বদলে গেছে। এতেও ক্ষতি হচ্ছে অনেক। ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটের গবেষকরা দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়েও সতর্ক করছেন। কাছাকাছি অবকাঠামো নির্মাণাধীন এলাকা থেকে প্রচুর ধুলা এসে পড়ায় বরফ এখন আর আগের মতো ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশ সূর্যকিরণ প্রতিফলিত করতে পারছে না। ডোবহাল বলেন, ধূলিকণাগুলো হিমবাহ পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে এখন আর বরফের স্তরগুলোকে আগের মতো সাদা মনে হয় না। এই ধূলিকণা খুবই বিপজ্জনক। এমন ধূলিকণা তাপ শুষে নেয় এবং বরফ খুব দ্রæত গলতে বাধ্য করে। যদিও ওই ধূলির স্তর ১ থেকে ২ মিলিমিটারের বেশি হবে না। কিন্তু এটি বরফ গলার হার বাড়িয়ে দেয়। যা ওই পর্বতমালার বাস্তুসংস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

স্বামী ধর্মানন্দ জানান, এখানে নতুন নতুন প্রজাতি পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, গত বছর মশা দেখা গেছে। বিছানার পোকাও পেয়েছি। নতুন নতুন জীব বেরিয়ে আসছে। ৬ কিলোমিটার নিচে জোঁকও পাওয়া যাচ্ছে। আর ১৩ কিলোমিটার নিচে নদীর তীরে সাপ পাওয়া গেছে। ২০ থেকে ৩০ বছর আগে এগুলোর কোনোটিই ছিলো না এখানে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, এই হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ২১০০ সাল নাগাদ হিমালয়ের সব হিমবাহ গলে যাবে। এতে এশিয়ার ৩টি প্রধান নদী ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ পানির জন্য ওই হিমবাহের ওপর নির্ভরশীল। তাই পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বতশৃঙ্গের হিমবাহ বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্যে প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়