রাশিদ রিয়াজ : বায়ো-জেট ফুয়েল বা জৈব-জেট জ্বালানি তৈরি হয় অ-ভোজ্য 'ট্রি বোর্ন ওয়েল' থেকে। ভারতের ছত্তীসগঢ়ের উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে পাওয়া যায় এই 'ট্রি বোর্ন ওয়েল'-এর গাছ। নিয়মিত জৈব-জ্বালানিতে বিমান উড়লে বাতাসে কার্বনের নির্গমণ কমবে। সেইসঙ্গে অপরিশোধিত জ্বালানি আমদানির খরচও লাঘব হবে।
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বায়ো-জেট জ্বালানিতে উড়ল ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান। ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য নিঃসন্দেহে এটি একটি মাইলফলক। কারণ, পরীক্ষামূলক হলেও এর আগে বায়ো-জেট জ্বালানিতে বিমান চালানোর ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। আইএএফ সূত্রে খবর, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি, ২০২০) লেহের কুশোক বাকুলা রিম্পোচি বিমানবন্দর থেকে বায়ুসেনার যে এএন-৩২ যুদ্ধবিমান টেক-অফ করে, তার দু'টি ইঞ্জিনেই ছিল ভারতে তৈরি বায়ো-জেট ফুয়েল। দু'টি ইঞ্জিনেই বায়ো-জেট জ্বালানি দিয়ে, আগে কখনও বিমান চলেনি। বায়ো-জেটের ১০% মিশ্রণ মেশানো হয়েছিল।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০,৬৮২ ফুট উচ্চতায় লেহ। অবস্থানের দিক থেকে বিশ্বের উচ্চতম বিমানবন্দরগুলির একটি শুধু নয়, স্বাভাবিক আবহাওয়াতেও এখান থেকে কোনও বিমানের টেক-অফ বা ল্যান্ডিংও অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ফলে, এমন এক বিরূপ পরিবেশে বায়ো-জেট জ্বালানিতে বিমান ওড়ানো ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বেঙ্গালুরুর এয়ারক্র্যাফট ও সিস্টেম টেস্টিং এসটাবলিশমেন্ট এবং অপারেশনাল স্কোয়াড্রনের পাইলটের একটি টিম এদিন পরীক্ষামূলক ভাবে এএন-৩২ বিমান নিয়ে উড়েছিলেন।
সফল উড়ানের পর আইএএফের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন প্রযুক্তির সফল প্রয়োগে ভারতীয় বায়ুসেনা যে সক্ষম, তা আবারও প্রমাণ হল।
২০১৩ সালেই দেশীয় প্রযুক্তিতে এই জৈব জেট-জ্বালানি তৈরি করেছিল CSIR-IIP। কিন্তু, তা বাণিজ্যক ভাবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পায়নি। বার কয়েক পরীক্ষা না-হওয়ার কারণেই এই ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালে আইএএফ এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখায়। স্পনসরও করে। বায়ুসেনার যে রিসোর্স আছে, তা-ও কাজে লাগানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :